৫ই নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এই নির্বাচন শুধু যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি, পররাষ্ট্রনীতি, সমাজনীতির ওপর প্রভাবই ফেলবে না। একই সঙ্গে বিশ্বকে প্রভাবিত করবে। বিশ্ব মোড়ল যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের ওপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হতে পারে গাজা, লেবানন যুদ্ধের গতি-প্রকৃতি। বদলে যেতে পারে ইউক্রেন পরিস্থিতি। পাল্টে যেতে পারে মধ্যপ্রাচ্যের পুরো রাজনৈতিক চিত্র। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত মুসলিম সম্প্রদায়, বিশেষ করে আরব আমেরিকানরা কমালা হ্যারিস নাকি ডনাল্ড ট্রাম্পকে বেছে নেবেন তা নিয়ে বিতর্ক চলছে। বলা হচ্ছে, গাজা যুদ্ধে ইসরাইলকে একাট্টাভাবে সমর্থন দিয়েছে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন। এ জন্য তার দল ডেমোক্রেটদের ওপর ক্ষিপ্ত মুসলিমরা। ফলে তারা নীরব ভোটবিপ্লবের মাধ্যমে ডনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দিতে পারেন। কিন্তু তাতে কি সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে? ট্রাম্প কি মুসলিমপন্থি? তিনি কি মুসলিমদের স্বার্থকে দেখেন? মনে পড়ে প্রথম দফায় যখন তিনি নির্বাচিত হন, তখন তিনি ৯০ দিন বা তিন মাসের জন্য সাতটি মুসলিম দেশকে যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ করেন। তারা হলো- ইরান, ইরাক, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া ও ইয়েমেন। একই সঙ্গে ১২০ দিন বা চার মাসের জন্য শরণার্থী পুনর্বাসন স্থগিত করেন। অনির্দিষ্টকালের জন্য সিরিয়ার শরণার্থীদের নিষিদ্ধ করেন। এই ট্রাম্পই সৌদি আরব, মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন মুসলিম দেশ, মুসলিম জাহানের প্রতিবাদ উপেক্ষা করে একতরফাভাবে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে স্থানান্তর করে জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। অন্যদিকে ফিলিস্তিনিদের স্বার্থের দিকে না তাকিয়ে তিনি আব্রাহাম একর্ডের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশের সঙ্গে ইসরাইলের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখেন। এর মধ্যদিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের আরবদের মধ্যে ইসরাইলকে ঢুকিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন তিনি। ফলে ডেমোক্রেটরা যেমন ফিলিস্তিনি তথা গাজার মানুষের দুর্দশার কথা ভাবে না, ঠিক তেমনি ডনাল্ড ট্রাম্পও মুসলিমদের প্রতি সহানুভূতিশীল নন। এক্ষেত্রে মার্কিন মুসলিমরা কাকে বেছে নেবেন- তা একান্তই তাদের নিজস্ব ব্যাপার।
২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির প্রতি সংহতি প্রকাশ করতে আকস্মিক সফরে কিয়েভে যান। রাজধানী কিয়েভের ভেতর দিয়ে হেঁটে বেড়ান। এরপর বলেন, যুক্তরাষ্ট্র হলো বিশ্বের বাতিঘর। সেই বাতিঘরের দায়িত্বে এখন কে আসেন তা দেখতে বিশ্ববাসী উদগ্রীব। মঙ্গলবার সেখানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এর সমাপ্তি ঘটছে। এই নির্বাচনে বাইডেনের পদাঙ্ক অনুসরণ করতে পারবেন কমালা হ্যারিস? বিশ্বায়ন নয়, আমেরিকায়নের যে আশা দেখাচ্ছেন ডনাল্ড ট্রাম্প তা কি তাকে পথ করে দেবে? বর্তমানে আমরা এমন এক বিশ্বে আছি যেখানে প্রশ্নের মুখে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক প্রভাব। আঞ্চলিক শক্তিগুলো তাদের মতো করে পথ করে নিচ্ছে। স্বৈরাচার শাসকগোষ্ঠী তাদের নিজেদের মতো করে জোট করে নিচ্ছে। গাজা, ইউক্রেনে চলছে বিপর্যয়কর যুদ্ধ। এসব যুদ্ধ অস্বস্তিকর প্রশ্ন সৃষ্টি করছে ওয়াশিংটনের ভূমিকা নিয়ে। কিন্তু অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তির দিক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র অনেক মিত্রদের সঙ্গে বড় রকমের ভূমিকা পালন করছে। ন্যাটোর সাবেক ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল রোজ গোটেনমুয়েলার বলেন, এসব সতর্কতাকে আমি প্রলেপ দিয়ে রাখতে পারি না। ইউরোপের জন্য আতঙ্ক হলেন ডনাল্ড ট্রাম্প। কারণ, তিনি ন্যাটো থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেয়ার যে হুমকি দিয়েছেন তা সবার কানে কানে প্রতিধ্বনি তুলছে। অন্য ৩১ সদস্যবিশিষ্ট ন্যাটোতে মোট যে সামরিক বাজেট তার মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ দিয়ে থাকে ওয়াশিংটন। চীন ও রাশিয়া সহ পরবর্তী ১০টি দেশ মিলে যে অর্থ খরচ করে তার চেয়ে বেশি অর্থ খরচ করে যুক্তরাষ্ট্র একা। ট্রাম্প জানিয়েছেন তিনি ন্যাটোর খরচ মেটাতে অন্য দেশগুলোকে খরচ বাড়াতে বলবেন। এসব দেশ তাদের জাতীয় প্রবৃদ্ধির শতকরা মাত্র ২ ভাগ দিয়ে থাকে। এ বছর এই টার্গেট অর্জন করেছে এই সংগঠনের মাত্র ২৩টি সদস্য দেশ। মিস গোটেমুয়েলার বিশ্বাস করেন, যদি কমালা হ্যারিস জয়ী হন তাহলে ওয়াশিংটনের হাতে নিঃসন্দেহে ভালো থাকবে ন্যাটো। কিন্তু সে ক্ষেত্রে তার জন্যও সতর্কতা রয়েছে। ইউক্রেনে জয় অর্জন করার জন্য ন্যাটো এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সঙ্গে তাকে অব্যাহতভাবে কাজ করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। ফলে তিনি ইউরোপে ব্যয়ের চাপ থেকে মুক্ত থাকবেন না। কমালা হ্যারিসের টিম সিনেট বা প্রতিনিধি পরিষদ হয়তো নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এমনও হতে পারে খুব তাড়াতাড়ি তা চলে যেতে পারে রিপাবলিকানদের হাতে। যদি তা-ই ঘটে তাহলে তারা বিদেশে যুদ্ধকে ডেমোক্রেটদের মতো সমর্থন নাও করতে পারেন। এই অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রে যিনিই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হোন না কেন কিয়েভের ওপর তীব্র চাপ সৃষ্টি হবে ইউক্রেন যুদ্ধ সমাধানের একটি উপায় বের করতে। কারণ, মার্কিন আইনপ্রণেতারা এই যুদ্ধের জন্য বিপুল পরিমাণ সহায়তা প্যাকেজ পাস করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করবে। মিস গোটেমুয়েলার বলেন, যা-ই ঘটুক আমি বিশ্বাস করি না যে, ন্যাটোর পতন হবে। একে সামনে এগিয়ে নিতে পদক্ষেপ নিতে হবে ইউরোপকে। শীতল যুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় শক্তিধরদের মধ্যে সংঘাতের সবচেয়ে বড় ঝুঁকি মোকাবিলা করতে কঠোরভাবে কাজ করতে হবে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্টকে। ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কমফোর্ট ইরো বলেন, শান্তি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রয়েছে এখনো যুক্তরাষ্ট্রের। কিন্তু দ্বন্দ্ব নিরসনে তাদের ক্ষমতা ক্রমশ কমে আসছে। অন্যদিকে যুদ্ধ ক্রমশ এমন আকার ধারণ করছে যা শেষ হবে বলে মনে হয় না। মারাত্মক সংঘাত আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৃহৎ শক্তিগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা ত্বরান্বিত হচ্ছে। মধ্যম পর্যায়ের শক্তির উত্থান ঘটবে বলে মনে করেন মিস ইরো। ইউক্রেনের মতো যুদ্ধে বহু শক্তি যুক্ত হয়। সুদানের মতো জ্বলন্ত একটি যুদ্ধে প্রতিটি আঞ্চলিক পক্ষ নিজেদের স্বার্থ নিয়ে প্রতিযোগিতা করে। আবার অনেকে শান্তির চেয়ে যুদ্ধে বেশি বিনিয়োগ করে। মিস ইরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্র তার উচ্চ নৈতিকতা হারাচ্ছে। বিশ্ব জুড়ে বিভিন্ন শক্তি দেখতে পেয়েছে যে, ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার বিরুদ্ধে এক রকম মানদণ্ড এবং গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসনের বিষয়ে অন্য রকম মানদণ্ড। সুদান যুদ্ধ ভয়াবহ নৃশংসতা দেখেছে। কিন্তু এটাকে দ্বিতীয় পর্যায়ের ইস্যু হিসেবে দেখা হয়। মিস ইরো বলেন, যদি কমালা হ্যারিস বিজয়ী হন তাহলে বর্তমান বাইডেন প্রশাসনের ধারা অব্যাহত রাখবেন তিনি। অন্যদিকে যদি ট্রাম্প নির্বাচিত হন তাহলে তিনি গাজায় ইসরাইলকে ফ্রি-হ্যান্ড সুবিধা দেবেন। তিনি হুমকি দিয়েছেন মস্কোর সঙ্গে ইউক্রেনের চুক্তি কর্তন করার চেষ্টা করবেন। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বার বার ইসরাইলের দাবিকে সমর্থন দিয়ে বলেছেন, তাদের আত্মরক্ষার অধিকার আছে। ফলে মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে ডেমোক্রেট প্রার্থী কমালাও একই বাক্যের প্রতিধ্বনি তুলেছেন। তবে কমালা হ্যারিস এক্ষেত্রে একটু এগিয়ে বলেছেন, ফিলিস্তিনের নিরপরাধ মানুষদের হত্যা করা বন্ধ করতে হবে। ট্রাম্পও ঘোষণা দিয়েছেন, এখন সময় শান্তিতে ফিরে যাওয়া এবং মানুষ হত্যা বন্ধ করার। কিন্তু তিনি ইসরাইলি নেতাকে বলেছেন, ‘আপনি যা করার করে যান’। রিপাবলিকান প্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্প নিজেকে একজন শান্তি প্রতিষ্ঠাকারী হিসেবে দেখেন। তিনি রোববার রাতে আল আরাবিয়া টিভিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছে, শিগগিরই আমি মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি স্থাপন করবো। শুধু তা-ই নয়, তিনি ২০২০ সালের আব্রাহাম একর্ড চুক্তি সম্প্রসারণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এই চুক্তির মধ্যদিয়ে তিনি মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি আরব দেশের সঙ্গে ইসরাইলের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করিয়েছেন প্রথম মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার সময়। কিন্তু তার এই উদ্যোগকে দেখা হয় ফিলিস্তিনিদের অধিকারকে একপাশে সরিয়ে রেখে চুক্তি করা হিসেবে। এর ফলেই বর্তমানে অপ্রত্যাশিত সংকট সৃষ্টি হয়েছে গাজা, লেবানন, ইরানকে নিয়ে।
ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মতো শক্তিধর ব্যক্তিদের প্রতি নিজের আনুগত্য কখনো লুকিয়ে রাখেননি ট্রাম্প। তিনি এটা পরিষ্কার করেছেন যে, ইউক্রেন যুদ্ধের শেষ চান তিনি। এক্ষেত্রে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বিপুল সামরিক ও আর্থিক সমর্থন বন্ধ করতে চান। পক্ষান্তরে কমালা হ্যারিস বলেছেন, ইউক্রেনের পাশে দাঁড়াতে পেরে আমি গর্বিত। ইউক্রেনের পাশে অব্যাহতভাবে অবস্থান নেবো। যুদ্ধে ইউক্রেন যাতে বিজয়ী হয় তা নিশ্চিত করতে কাজ করবো। কিন্তু মিস ইরো উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, কে নির্বাচিত হবেন যুক্তরাষ্ট্রে তাতে কিছু এসে যায় না। যিনিই নির্বাচিত হবেন বিশ্বের পরিস্থিতি ক্রমশ অবনতির দিকে যাবে। এটা হবে কয়েক দশকে বিশ্ব অর্থনীতির জন্য সবচেয়ে বড় হতাশার। চীনের সব রকম পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ট্রাম্প শতকরা ৬০ ভাগ শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব দিয়েছেন। এর প্রেক্ষিতে ওই মন্তব্য করেছেন চীনের শীর্ষ স্থানীয় পণ্ডিতব্যক্তি রানা মিত্তার। ডনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকা ফাস্ট নীতিতে চলতে চান। এর প্রেক্ষিতে তিনি চীন ও অনেক বাণিজ্যিক অংশীদারদের ওপর কড়া মূল্য আরোপ করতে চান। আবার তিনি এটাই জোরালো গলায় বলেছেন যে, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত শক্তিশালী সম্পর্ক আছে। চীন যদি তাইওয়ানে ব্লকেড দেয় তাহলে তাইওয়ানকে সমর্থন দিতে সামরিক শক্তি ব্যয় করবেন না ট্রাম্প। তিনি বলেন, এর কারণ হলো চীনের নেতা আমাকে সম্মান করেন। তিনি জানেন আমি কতোটা ক্রেজি। কিন্তু রিপাবলিকান বা ডেমোক্রেট উভয়ই বাজপাখির মতো দৃষ্টি রেখেছে। উভয় পক্ষই বেইজিংকে এখন সবচেয়ে ফলপ্রসূ শক্তি হিসেবে দেখে, যারা যুক্তরাষ্ট্রকে গ্রাস করার চেষ্টা করছে।
বৃটিশ ইতিহাসবিদ মিত্তার। তিনি হার্ভার্ড কেনেডি স্কুলের যুক্তরাষ্ট্র-এশিয়া সম্পর্ক বিষয়ক এসটি লি চেয়ার। তিনি এক্ষেত্রে কিছু ভিন্নতা দেখতে পান। মিস কমালা হ্যারিস সম্পর্কে তিনি বলেন, সম্পর্ক বর্তমানে যেখানে আছে তা থেকে কিছুটা উন্নত হতে পারে। যদি ট্রাম্প জয়ী হন তাহলে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হতে পারে। উদাহরণ হিসেবে তাইওয়ানের কথা বলা যায়। ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহু বহু দূরের একটি দ্বীপ তাইওয়ানকে রক্ষায় এগিয়ে আসবেন কিনা তা স্পষ্ট নয়। চীনের নেতারা কমালা অথবা ট্রাম্প দু’জনকেই খুব কঠোর বলে মনে করেন। কিংবদন্তি নেলসন ম্যান্ডেলা এবং আয়ারল্যান্ডের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার সহ বিশ্বনেতারা একটি গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন। এর নাম দেন এল্ডার্স। এর চেয়ার বর্তমানে মেরি রবিনসন। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন শুধু মার্কিন নাগরিকদের ক্ষেত্রেই প্রভাবিত করবে না। একই সঙ্গে পুরো বিশ্বের ওপর এর প্রভাব পড়বে। জলবায়ু ও প্রাকৃতিক সংকটে এর প্রভাব পড়বে। ওদিকে ইসরাইলি নাগরিকদের বিরুদ্ধে ২০২৩ সালের ৭ই অক্টোবর হামাসের হামলা ও হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছেন বিভিন্ন ত্রাণ বিষয়ক সংস্থার কর্মকর্তারা। তারা গাজা ও লেবাননে যে অগণিত মানুষের দুর্ভোগ তা বন্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছেন। বাইডেন ও তার শীর্ষ কর্মকর্তারা গাজার জন্য আরও ত্রাণ বৃদ্ধির আহ্বান জানাচ্ছেন। কিন্তু সমালোচকরা বলছেন এই ত্রাণ ও ইসরাইলের ওপর তাদের চাপ কখনোই যথেষ্ট নয়। সম্প্রতি ইসরাইলকে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক সহায়তা বন্ধ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু নির্বাচনের পর তারা এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে পারে। জাতিসংঘ সিস্টেমে এককভাবে সবচেয়ে বেশি অনুদান দেয় যুক্তরাষ্ট্র। ২০২২ সালে তারা রেকর্ড ১৮.১ বিলিয়ন ডলার দিয়েছে। কিন্তু ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে তিনি জাতিসংঘের বেশ কিছু এজেন্সিতে অর্থায়ন কর্তন করেছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিয়েছেন। এর ফলে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে তা সামাল দিতে অন্য ডোনারদের হিমশিম খেতে হয়েছে। অবশ্য এমনটা চাইছিলেন ট্রাম্প।