‘আই অ্যাম নট গোয়িং টু স্টার্ট এ ওয়ার। আই অ্যাম গোয়িং টু স্টপ ওয়ারস’- নির্বাচনে জয়ের পর বিজয়ী প্রথম ভাষণে এই ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ডনাল্ড ট্রাম্প। তিনি আরও বলেছেন, আমার প্রশাসনের অধীনে কোনো যুদ্ধ ছিল না। ব্যতিক্রম- আমরা আইসিসকে পরাজিত করেছি। রেকর্ড সময়ের মধ্যে আইসিসকে পরাজিত করেছি।
আগামী ২০শে জানুয়ারি তার শপথ অনুষ্ঠান। এ জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছেন। তার প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে কে কে থাকবেন তা নির্ধারণ করছেন। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমন্ত্রণে ১৩ই নভেম্বর হোয়াইট হাউসে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ট্রাম্প। তাকে মসৃণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বাইডেন। এই ক্ষমতা হাতে পেয়ে তিনি নির্বাচনী ওয়াদা অনুযায়ী, বিজয়ী ভাষণ অনুযায়ী যুদ্ধ বন্ধে পদক্ষেপ নেবেন- এমনটা আশা করে তার প্রতিপক্ষও। যুদ্ধ বন্ধের পাশাপাশি তার প্রশাসনের সময়কাল চীনের দিকে থাকবে বাজপাখির দৃষ্টি। এর মধ্যে তিনি যাদেরকে তার প্রশাসনে নিয়োগ দিয়েছেন তাদেরকে দেখা হয় চীনের কঠোর সমালোচক হিসেবে। এর মধ্যে ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের সাবেক পরিচালক জন র্যাটক্লিফকে সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির প্রধান হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছেন। ফক্স নিউজের উপস্থাপক ও বর্ষীয়ান সেনা পিটি হেগসেঠক প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং ফ্লোরিডার কংগ্রেসম্যান মাইকেল ওয়াল্টজকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে মনোনীত করেছেন। এর আগে নিউ ইয়র্ক থেকে নির্বাচিত প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য এলিসে স্টেফানিককে জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসেবে বেছে নিয়েছেন ট্রাম্প। তবে ফ্লোরিডার সিনেটর মার্কো রুবিওর ভাগ্য ঝুলে আছে। তাকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে বাছাই করা হতে পারে বলে আলোচনা আছে। ট্রাম্প এখনো এ পদে সিদ্ধান্ত পাকা করেননি। যে ৫ জনের বিষয় সিদ্ধান্ত হয়েছে তারা যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে ক্ষমতার লড়াইয়ের জন্য সুপরিচিত। তারা বেইজিংয়ের প্রতি হার্ডলাইনে থাকার জন্যও সুপরিচিত। ওদিকে তেসলা এবং স্পেসএক্স-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইলন মাস্ক এবং উদ্যোক্তা বিবেক রামাস্বামী ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি’র নেতৃত্বে দেবেন। চীনের দিকে বাজপাখির মতো দৃষ্টি আছে আরও বেশ কয়েকজনের। তারা ট্রাম্প প্রশাসনে যোগ দেয়ার প্রার্থী তালিকায় আছেন বলে খবর ভাসছে ইথারে। এর মধ্যে আছেন জার্মানিতে দায়িত্ব পালন করা সাবেক রাষ্ট্রদূত রিচার্ড গ্রেনেল, টিনেসির সিনেটর বিল হ্যাগার্টি এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক বাণিজ্য প্রতিনিধি রবার্ট লাইথাইজার। বিষয়টি জানেন এমন সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে মঙ্গলবার ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল লিখেছে, ‘ট্রেড জার’ হিসেবে লাইথাইজারকে পেতে চান ট্রাম্প। প্রথম দফা ট্রাম্পের ক্ষমতার মেয়াদে তার বাণিজ্যিক যুদ্ধে বড় রকম ভূমিকা পালন করেছিলেন লাইথাইজার। ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে সারাবিশ্ব, বিশেষ করে দক্ষিণ, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া কেমন যাবে তা নিয়েও চলছে জল্পনা।
দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে বড় রকম পরিবর্তন আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে ভারত উপমহাদেশে ডনাল্ড ট্রাম্প ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সখ্য সর্বজনবিদিত। ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতিতে সব সময় জোর দেয়া হয় ‘আমেরিকা ফার্স্ট’। তার প্রথম মেয়াদে মোদির সঙ্গে যে ‘হাউডি মোদি’ এবং ‘নমস্তে ট্রাম্প’ প্রদর্শন করেছেন দু’জনে- তা কূটনীতির এক ব্যতিক্রম ভিত্তি রচনা করেছে। এই কূটনীতিকে ব্যবহার করে তারা শুধু ভারত নয়, ভারতীয় উপমহাদেশের রাজনীতিকে বদলে দিতে পারেন। এর মধ্যে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারত বড় একটি অনুঘটক। তাদের সরাসরি বা পরোক্ষ হস্তক্ষেপে গত ১৫ বছরে কমপক্ষে তিনটি নির্বাচনে বৈতরণী পেরিয়ে গেছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ। এ নির্বাচন সম্পর্কে সবাই জানেন। সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৭ই জানুয়ারি যে নির্বাচন হয় তার আগে যুক্তরাষ্ট্র, বিশেষ করে মার্কিন সাবেক রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস্ গণতন্ত্র ফেরানোর যে অক্লান্ত চেষ্টা করেন, তা ভেস্তে যায় ভারতের কারণে। তাদের কারণে যুক্তরাষ্ট্র শেষ পর্যন্ত নমনীয় হয়। যেনতেন একটি নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ জনগণের মাথায় চেপে বসে। এ সময় ক্ষমতায় প্রেসিডেন্ট বাইডেন। কিন্তু নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প যখন হোয়াইট হাউসে বসবেন, তার সঙ্গে মোদির অন্তরঙ্গ সম্পর্ককে ব্যবহার করে বাংলাদেশের রাজনীতিকে বদলে ফেলার চেষ্টা হতে পারে। বাংলাদেশের পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে বসে অন্তত সেই ঘুঁটিই চালছেন। তার ফাঁস হওয়া বা কথিত ফাঁস করে দেয়া টেলিফোন পরিষ্কার করে দেয় যে- আওয়ামী লীগের রাজনীতি ট্রাম্পনির্ভর হয়ে পড়ছে। তারা এ জন্য তদবিরও করছে। ট্রাম্পের ছবি নিয়ে মিছিল করার নির্দেশ এবং তাতে হামলা হলে সেই ছবি তুলে রাখতে নেতাকর্মীদের যে নির্দেশনা দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা, তা আধুনিক মুক্ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে বিশ্ববাসী জেনে গেছে। এক্ষেত্রে হয়তো ভারত তাকে, আওয়ামী লীগকে সহায়তা করতে পারে, করবে। করবে যে না- এমন সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ভারতের মানবাধিকার, সংখ্যালঘুদের অধিকারের দিকে চোখ বন্ধ করে রাখতে পারেন ট্রাম্প। এর মাধ্যমে মোদির হাতে রাজনীতির ব্লাংক চেক তুলে দিতে পারেন। তাছাড়া রাশিয়ার সঙ্গে আছে ভারতের ভালো সম্পর্ক। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বাগে আনতে মোদিকে ব্যবহার করতে পারেন ট্রাম্প। অবশ্য পুতিনের সঙ্গে তার নিজেরই সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত সাংবাদিক বব উডওয়ার্ড। ট্রাম্পের টার্গেট যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করা। এ জন্য তিনি বাইরের বিশ্বে কোথায় কী হচ্ছে, তা নিয়ে খুব বেশি মাথা ঘামাবেন বলে মনে হয় না। তবে হ্যাঁ, যদি যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে আঘাত লাগে তাহলে ট্রাম্প চুপ করে থাকবেন না। এক্ষেত্রে মোদি এবং ট্রাম্প দু’জনেই নীতির দিক দিয়ে একই ঘরানার। তারা ব্যবসাবান্ধব, নিয়মনীতি শিথিল করেন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিকে দৃষ্টি দেন। তাদের নেতৃত্বে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র বৈশ্বিক অর্থনীতিতে নতুন অবস্থান তৈরি করবে। তাদের লক্ষ্য হবে অভিন্ন: ভারত চায় বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ অর্থনীতি হতে। অন্যদিকে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবকে মোকাবিলার জন্য অধিক সংখ্যক মিত্রের ওপর নির্ভরতা বাড়াতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। তাদের ঘনিষ্ঠতা অব্যাহত থাকবে- এমনটাই মনে হচ্ছে। তাদের এই সম্পর্ক শুধু অর্থনৈতিক সম্পর্ককে গাঢ় করবে এমন নয়। একই সঙ্গে সন্ত্রাস মোকাবিলা, ইন্দো-প্যাসিফিককে স্থিতিশীল করার দিকে জোর আছে। ওদিকে ক্ষমতার প্রথম মেয়াদে বহুল বিতর্কিত কাশ্মীর সমস্যার সমাধানের পক্ষে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন ট্রাম্প। বিষয়টি ভারতকে অস্বস্তিকর অবস্থায় ফেলেছিল। ট্রাম্প যেহেতু যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে যদি এবার অগ্রসর হন তাহলে তাতে বিশ্বমঞ্চে নতুন এক উচ্চতায় উঠে যেতে পারেন। কিন্তু ভারত সেটা হতে দেবে বলে মনে হয় না। কারণ, কাশ্মীরকে ভারত তার অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে দেখে থাকে। ফলে ভারতকে ট্রাম্প ক্ষেপিয়ে তুলবেন- এমনটা হতে পারে না। পাকিস্তানে সন্ত্রাস বৃদ্ধির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা কর্তন করা হয়েছিল। তারপর পাকিস্তান ক্রমাগত ঝুঁকে পড়েছে চীনের দিকে। যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে চীন। এই চীনকে মোকাবিলা করতে হলে ভারতকে পাশে পাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য। চীনকে দমিয়ে রাখার জন্য যুক্তরাষ্ট্র তার রপ্তানি পণ্যের ওপর শতকরা ৬০ ভাগ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রে চীনা পণ্য মারাত্মকভাবে মার খাবে। কৌশলটা ট্রাম্পের। যদি চীন মার খায়, তাহলে মার্কিন পণ্যের কদর বাড়বে। যুক্তরাষ্ট্র সমৃদ্ধ হবে। এখানেই শেষ নয়। দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ ক্রমাগত চীনমুখী হয়ে পড়ছে। তার মধ্যে পাকিস্তান ছাড়াও আছে মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল, ভুটানসহ বিভিন্ন দেশ। তারা ক্রমশ চীনের বলয়ে চলে যাচ্ছে। ট্রাম্প এই বলয় কীভাবে ছোটান তা সময়ই বলে দেবে। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ার কথা। বাংলাদেশও চীনের দিকে যথেষ্ট অগ্রসর হয়েছে। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সেভেন সিস্টার্সের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনকারী চিকেন নেক নিয়ে বেশ আলোচনা চলছে সাম্প্রতিক সময়ে। বিশেষ করে বাংলাদেশে গত ৫ই আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর। বলাবলি হচ্ছে, যদি চিকেন নেকের দিকে চীন নজর দেয়, তাহলে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে পারে ভারত। এসব বিষয়ে ভারত ও ভারতীয় বোদ্ধামহল সচেতন। ফলে চীনকে আয়ত্তে রাখতে ট্রাম্পের সঙ্গে দস্তি বাড়বেন মোদি। এমন প্রেক্ষাপটে দক্ষিণ এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ভারতের ত্রিমুখী এক কৌশলগত লড়াই চলতে থাকবে।
সাম্প্রতিক সময়ে দু’টি বড় যুদ্ধ শুরু হয়েছে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সময়ে। তা হলো গাজা ও ইউক্রেন যুদ্ধ। অতীতে মার্কিন কর্মকর্তাদের নজরদারিতে সামরিক হস্তক্ষেপের বিষয়ে, বিশেষ করে ইরাক ও আফগানিস্তানে যুদ্ধের কড়া সমালোচনা করেছেন। তিনি কঠোর কথাবার্তা বলেন। শক্তিশালী ব্যক্তিত্ব আছে। তার ওপর ভিত্তি করে তিনি নিজেকে একজন পিসমেকার হিসেবে সচেতনভাবে বসানোর চেষ্টা করে যান। তিনি বাইরের দেশগুলোর যুদ্ধ বন্ধ করতে চান যাতে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি এবং অবকাঠামোতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পায়। এ জন্য তিনি যখন বিজয়ী হলেন তখন তার শত্রুরাও তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তাকে একজন ‘সাহসী মানুষ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন করে শুরু হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন। ইরানের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বর্ষীয়ান কূটনীতিক মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ আশা প্রকাশ করেছেন যে, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী যুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে ট্রাম্পের দ্বিতীয় প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্রের ইলেক্টোরেটরা যুদ্ধ বন্ধের এবং নতুন যুদ্ধ প্রতিরোধের যে রায় দিয়েছেন- তা থেকে তিনি শিক্ষা নেবেন বলে আশা করেন জারিফ। সম্ভবত সবচেয়ে কঠিনভাবে সাড়া এসেছে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের পক্ষ থেকে। তিনি ট্রাম্পকে বলেছেন, দুই দেশ সহযোগিতা থেকে উপকৃত হবে। সংঘাত হলে ক্ষতি দু’দেশের। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অধীনে গত চার বছরে ইউক্রেন যুদ্ধে অর্থ ও অস্ত্র সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়ার অর্থনীতির মারাত্মক অবনমনের আশা করেছিলেন বাইডেন। কিন্তু তা ব্যর্থ হয়েছে। রাশিয়ার ধ্বংস হয়নি। নিজের দেশ থেকে রাশিয়াকে তাড়াতে পারেনি ইউক্রেন। অন্যদিকে ইউরোপও নিরাপদ হয়নি। পক্ষান্তরে নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও চীন, উত্তর কোরিয়া ও ইরানের সমর্থনে রাশিয়া স্থিতিস্থাপক অবস্থায় আছে। এখন এই চারটি দেশের মধ্যে সম্পর্ককে দেখা হচ্ছে ইউরেশিয়ার জন্য এক নতুন হুমকি হিসেবে। বাইডেন প্রশাসনের সময়ে চীন ও রাশিয়ার ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি পেয়েছে। যুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার প্রবেশ এবং রাশিয়া-উত্তর কোরিয়া কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি পিয়ংইয়ংকে টিকে থাকার শক্তি দিয়েছে। ফলে রাশিয়ার সঙ্গে যদি সম্পর্ক উল্টে দেয়া না যায়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ কোনো সরকার উত্তর কোরিয়াকে বাগে আনতে পারবে না। ইউক্রেনকে অস্ত্র ও অর্থের অবাধ সরবরাহ সত্ত্বেও তার সুবিধা গেছে মস্কোর পক্ষে। অন্যদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মিথ্যা দাবি করেছেন যে, বিজয় তার দ্বারপ্রান্তে। ট্রাম্প হয়তো ইউক্রেনকে সামরিক ও আর্থিক সহায়তা বন্ধ করে দিয়ে তাকে দুর্বল করে দেবেন। ফলে বাধ্য হয়ে জেলেনস্কি যুদ্ধ বন্ধের প্রস্তাব দিয়ে বসতে পারেন। নির্বাচিত হওয়ার পর পুতিনের সঙ্গে কথা বলেছেন ট্রাম্প। এ সময় তারা বন্ধুত্বকে শক্তিশালী করার প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন। অন্যদিকে গাজা যুদ্ধে ট্রাম্প যে গাজাবাসীকে সমর্থন করবেন না, তা স্পষ্ট। কারণ, তিনি মুসলিমদের স্বার্থ বড় করে দেখেন না সেখানে। তিনি ইসরাইলের জন্য যথেষ্ট করেছেন এবং করবেন। হয়তো ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ব্লাংক চেক দিয়ে দিতে পারেন। ফলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে গাজায় যা অবশিষ্ট আছে তা নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে। ঘোষণা হতে পারে যুদ্ধ শেষ।