এক অভূতপূর্ব পরিবর্তনের মধ্যদিয়ে এগুচ্ছে বাংলাদেশ। চব্বিশের জুলাইয়ের পট পরিবর্তনে নতুন আকাঙ্ক্ষার জন্ম হয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে, সেই আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন কতোদূর? দেয়ালে গ্রাফিতির স্লোগানগুলো আমরা যদি মনে করি কি ছিল তা?
‘অপরাজনীতি রুখে দাও’, ‘বুকের ভেতর দারুণ ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর’, ‘বায়ান্ন দেখিনি চব্বিশ দেখেছি’, ‘তুমি কে আমি কে, বিকল্প বিকল্প’, ‘দেশটা কারও বাপের না’, ‘এখন দরকার জনতার সরকার’, ‘চলো রাষ্ট্র সংস্কার করি’, ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার! রাজাকার! কে বলেছে, কে বলেছে স্বৈরাচার স্বৈরাচার’, ‘ধর্মের চেয়ে মানুষ বড়, বর্ণের চেয়ে কর্ম বড়’, ‘দেশের কোনো ধর্ম নেই, দেশের কোনো বর্ণ নেই, দেশ আমার দেশ তোমার’, ‘হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, উই আর ওয়ান’, ‘ধর্ম যার যার দেশ সবার’, ‘ঘুষ চাইলে ঘুষি’, ‘২৪-এর গল্প, আমি নয় আমরা’, ‘বিকল্প কে? আমি, তুমি, আমরা’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘কোটাপ্রথা নিপাত যাক, দেশের মেধা দেশে থাক’, ‘সমতল থেকে পাহাড় এবারের মুক্তি সবার’, ‘স্বাধীন বিচার বিভাগ চাই’- আরও আরও।
উপরের কথাগুলোর প্রতিফলন এই এক বছরে কতোটুকু দেখছি? এখনো পর্যন্ত সরকার আইনশৃঙ্খলার দৃশ্যমান কোনো উন্নতি করতে পারেনি। মব যেন নৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঐকমত্য কমিশন একাধিক বৈঠকেও সংস্কার বাস্তবায়নের অগ্রগতি ফলপ্রসূ তা বলতে পারছে না। জুলাই গণহত্যার প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি বরং গায়েবি মামলার ভারে তটস্থ সাধারণ মানুষ। ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত। নতুন বিনিয়োগ শূন্যের কোঠায়। কর্মসংস্থান নেই। শিক্ষার পরিবেশ এখনো পুরোপুরি পড়ার টেবিলে বসতে পারেনি। সবচেয়ে বড় প্রশ্ন নির্বাচনী ট্রেনের রোডম্যাপ এখনো আসেনি। সব ছাপিয়ে যেদিকে লক্ষ্য রাখা জরুরি, সকলের অংশগ্রহণে একটি ন্যায়ভিত্তিক গণতান্ত্রিক বৈষম্যমুক্ত দেশগড়ায় সরকার যেন লাইনচ্যুত না হয়।