সা ম্প্র তি ক

সংস্কার প্রশ্নে বিএনপি’র দ্বিমত যেখানে

কিরণ শেখ | মতামত
এপ্রিল ২৬, ২০২৫
সংস্কার প্রশ্নে বিএনপি’র দ্বিমত যেখানে

সংস্কার প্রশ্নে সংবিধান ও নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের মৌলিক পরিবর্তনসহ বেশ কিছু সুপারিশের বিষয়ে কমিশনের সঙ্গে ঐকমত্য নয় বিএনপি। এক্ষেত্রে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের যে ২৮টি সুপারিশ নিয়ে নির্বাচন কমিশন আপত্তি জানিয়েছিল, বিএনপিও কমবেশি সেগুলো নিয়ে কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় আপত্তি জানিয়েছে। ওদিকে বহুত্ববাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে নয় বিএনপি। সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের সঙ্গে স্প্রেডশিটের ‘বিস্তর ফারাক’ও দেখছে দলটি। ‘স্প্রেডশিটে সংক্ষিপ্ত হ্যাঁ/না জবাব দেয়ার জন্য যে কাগজগুলো দিয়েছে তাতে করে অনেকটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে এবং বিচার বিভাগের মতামত নিয়ে প্রতিবেদনে ‘মিস লিড’ করা হয়েছে বলেও মনে করছে বিএনপি। এ ছাড়া বৈঠকে সংস্কার প্রস্তাবনাগুলো নিয়ে মতপার্থক্য ছিল এবং একমতও ছিল। ওদিকে সংবিধানের প্রজাতন্ত্র, রাষ্ট্র পরিচালনায় মূলনীতি, ফান্ডামেন্টাল রাইটসসহ অনেক ক্ষেত্রে তারা একমত পোষণ করেছেন। এ ছাড়াও নির্বাচন কমিশনকে দায়বদ্ধ করার জন্য একটি প্রস্তাব করেছিল সংস্কার কমিশন। সেটি হলো মেয়াদ-পরবর্তী সময়ে ইসি’র বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ উঠলে তা তদন্ত ও ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করার জন্য সংসদীয় কমিটিকে ক্ষমতা দেয়া। এই প্রস্তাবের সঙ্গে বিএনপি একমত হয়নি। দলটি মনে করে, এটি বাস্তবায়িত হলে ইসি’র স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হবে। সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণে আলাদা একটি কমিশন করার প্রস্তাবেও একমত হয়নি বিএনপি। এক ব্যক্তি একাধিক আসনে প্রার্থী হওয়ার বিধান বাতিল করতে বলেছিল কমিশন। এর সঙ্গেও একমত নয় দলটি। বৈঠকে বিএনপি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে যে, সংবিধান সংস্কারের বিষয়টি কেবলমাত্র নির্বাচিত পার্লামেন্টই করতে পারে। এটি দলের পক্ষ থেকে আগের আলোচনায়ও বলা হয়েছিল। এখনো বলা হচ্ছে। বিএনপি এ বিষয়ে অনড় অবস্থানে রয়েছে। এ ছাড়াও ন্যাশনাল কন্সটিটিউশন কাউন্সিল (এনসিসি), সংসদের উভয় কক্ষের মেয়াদ, সংসদ সদস্যের বয়স ২১ বছর করা, সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচন পদ্ধতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে কমিশনের প্রস্তাবের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন বিএনপি’র নেতারা। কমিশনের সঙ্গে বিএনপি’র বৈঠক আপাতত শেষ হয়েছে। প্রয়োজনে আনুষ্ঠানিক কিংবা অনানুষ্ঠানিক আরও বৈঠক হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
ওদিকে সংসদ নেতা, টানা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সর্বোচ্চ মেয়াদ ও দলীয় প্রধানের বিষয়ে আগের অবস্থানেই রয়েছে। বিএনপি’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে পরপর দুইবারের বেশি কোনো ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। কিন্তু একবার গ্যাপ দিয়ে দলের সিদ্ধান্তে হতে পারবেন। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে কেয়ারটেকার সরকারের প্রয়োজনীয়তা আছে। দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ, প্রধান বিচারপতি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অ্যাপিলেট ডিভিশনের সবচেয়ে জ্যেষ্ঠতম বিচারপতি নির্দিষ্ট না করে ‘জ্যেষ্ঠতম বিচারপতিদের মধ্যে ন্যূনতম দুই থেকে তিনজন’ রাখার প্রস্তাব করেছে বিএনপি। এ ছাড়া সাম?্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়বিচার- এ বিষয়গুলো মৌলিক অধিকারের মধ্যে আনার কথা বলেছে দলটি।


এ ছাড়াও নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের ২৪৩টি সুপারিশের মধ্যে বিএনপি ১৪১টিতে একমত হয়েছে। আংশিক একমত হয়েছে ১৪টিতে, মন্তব্যসহ ভিন্নমত দিয়েছে ৬৪টিতে। আর একমত নয় ২৪টিতে। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ২০৮টি প্রস্তাবের মধ্যে ১৮৭টিতে বিএনপি একমত হয়েছে। বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের ৮৯টি সুপারিশকে বিএনপি গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এর মধ্যে ৬২টিতে দলটি একমত হয়েছে। দুদক সংস্কার কমিশনের ২০টি সুপারিশের মধ্যে ১টিতে বিএনপি’র আপত্তি আছে। সংবিধান সংস্কারের ১৩১টি সুপারিশের বেশির ভাগের সঙ্গে দলটি একমত হয়েছে।


সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য গঠনের লক্ষ্যে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এরই ধারাবাহিকতায় বিএনপি’র সঙ্গে তিন দিন বৈঠক হয়েছে। গত ২২শে এপ্রিল বিএনপি’র সঙ্গে কমিশনের শেষ বৈঠক হয়। বিএনপি’র সঙ্গে প্রথম বৈঠক হয় গত ১৭ই এপ্রিল, এরপর গত ২০শে এপ্রিল। জাতীয় সংসদের এলডি হলে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপি’র বৈঠকের শেষ দিন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, পাঁচটি সংস্কার কমিশনের প্রায় ৬৯৪টি প্রস্তাবের মধ্যে বেশির ভাগের সঙ্গে বিএনপি একমত হয়েছে। আপাতত আলোচনা শেষ হয়েছে। প্রয়োজনে আনুষ্ঠানিক কিংবা অনানুষ্ঠানিক আরও আলোচনা হতে পারে।


এদিকে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কেউ অভিযুক্ত হলেই তাকে নির্বাচনের অযোগ্য ঘোষণার প্রস্তাব করেছিল। এই প্রস্তাবের সঙ্গেও একমত হয়নি বিএনপি। এ প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, কেউ অভিযুক্ত হলেই তাকে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে বলা যায় না। শুধু অভিযোগের ভিত্তিতে কাউকে অযোগ্য করা যুক্তিসংগত নয়। কেউ আদালতের রায়ে প্রাথমিকভাবে দোষী সাব্যস্ত হলে তাকে অযোগ্য ঘোষণা করা যায়।


সংবিধান সংস্কারে যেখানে একমত নয় বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতির মধ্যে ও রাষ্ট্রের তিনটি বিভাগের (আইনসভা, নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগ) মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনাই সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব তৈরির লক্ষ্য ছিল। এ বিষয়ে কিছু সুপারিশের সঙ্গে বিএনপি একমত হয়নি। কমিশন ক্ষমতার ভারসাম্য আনতে নির্বাহী বিভাগ, আইন সভা ও বিচার বিভাগ-রাষ্ট্রের এই তিনটি অঙ্গের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি ‘জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল’ (এনসিসি) গঠন করার প্রস্তাব করেছিল। কিন্তু বিএনপি এনসিসি গঠনের প্রস্তাবে একমত হয়নি। দলটি মনে করে, এই কাউন্সিল করা হলে সরকার দুর্বল হবে। তবে দলটি অবশ্য রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য একটি আইন করার প্রস্তাব দিয়েছে। 


ওদিকে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার মধ্যে ভারসাম্য আনা তাদের অঙ্গীকার বলে জানিয়েছে বিএনপি। বলছে, একই ব্যক্তি একাধারে প্রধানমন্ত্রী, দলীয় প্রধান ও সংসদ নেতা হতে পারবেন না, এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ দু’বার প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না-এই দুটি প্রস্তাবে একমত নয় বিএনপি। এক ব্যক্তি মাঝখানে বিরতি দিয়ে সর্বোচ্চ তিনবার প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন, এমন একটি প্রস্তাব আলোচনায় এলেও তা নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ ছাড়া সংসদ ও রাষ্ট্রপতির মেয়াদ চার বছর করা, সংবিধান সংশোধনে দুই কক্ষের অনুমোদনের পর গণভোট করা, জরুরি অবস্থা জারির প্রস্তাবিত বিধান, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি, মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা নামে আলাদা অধ্যায় অন্তর্ভুক্ত করা, সংবিধানে দেশের নাম পরিবর্তন, নিম্নকক্ষে তরুণদের জন্য ১০ শতাংশ আসনে মনোনয়ন দেয়া, সংসদ নির্বাচনের জন্য ন্যূনতম বয়স ২১ বছর করার মতো প্রস্তাবগুলোতেও বিএনপি একমত হয়নি। তবে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ এবং নিম্নকক্ষে সংরক্ষিত নারী আসন ১০০টি করার বিষয়ে বিএনপি একমত হলেও নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে দলটির মত ভিন্ন রয়েছে।


এদিকে আন্তর্জাতিক চুক্তির ক্ষেত্রে জাতীয় স্বার্থ বা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা প্রভাবিত করে, এমন কোনো আন্তর্জাতিক চুক্তি সম্পাদনের আগে আইনসভায় উভয় কক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে অনুমোদন নিতে হবে বলে কমিশনের প্রস্তাব ছিল। এই প্রস্তাবেও একমত হয়নি বিএনপি। তারা সংবিধানের বর্তমান এ সংক্রান্ত বিধান পরিবর্তনের পক্ষে নয়। এ ছাড়া নির্বাহী কর্তৃত্ব প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে মন্ত্রিসভা দ্বারা প্রয়োগ করা হবে বলে কমিশনের প্রস্তাব ছিল। এ প্রসঙ্গে বিএনপি’র মত হলো, মন্ত্রিপরিষদ প্রধানমন্ত্রীর কর্তৃত্বে পরিচালিত হতে হবে। 


সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, নির্বাহী বিভাগের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে মন্ত্রিসভা, বিষয়টা আসলে টেকনিক্যাল, আসলে এটা হচ্ছে কর্তৃত্বে মন্ত্রিসভা কর্তৃক পরিচালিত হবে সরকার, সেটা আগের বিধান যা আছে তা হলো। এখানে আমরা একমত নই বলতে পারেন। আর রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বাড়াতে আমরা আর্টিক্যাল-৪৮ এর সাব সেকশন-৩ পরে আরেকটা নতুন আর্টিক্যাল আমরা প্রস্তাব করবো, এখানে রাষ্ট্রপতির হাতে কি কি ক্ষমতা অর্পণ করা যায় এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা না করে রাষ্ট্রপতি কি কি ফ্যাংশন করতে পারেন, সেটা ডিটেলড করা থাকবে, অনেক বিষয় থাকবে, এই মুহূর্তে আমরা ডিসক্লোজড করছি না। সেটা কমিশন মোটামুটি গ্রহণ করেছেন বলে মনে হয়েছে। এখানে যাতে রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার মধ্যে ভারসাম্য আনয়ন করা যায়, এটা ব্যালেঞ্জড গভর্নমেন্ট ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা কায়েম করা যায়, সেই বিষয়ে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ- সেই বিষয়ে আমরা কাজ করছি।


বিএনপি যেসব বিষয়ে একমত:  সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের মধ্যে বিএনপি যেসব বিষয়ে একমত হয়েছে, তার মধ্যে আছে-বিদ্যমান সংবিধানের ৭ (ক) ও ৭ (খ) বিলুপ্ত করা, সংসদ দ্বিকক্ষবিশিষ্ট করা, উভয় কক্ষে দুজন ডেপুটি স্পিকারের একজন বিরোধী দল থেকে দেয়া, রাষ্ট্রপতির অভিশংসন প্রক্রিয়া, ‘অধস্তন আদালত’-এর বদলে ‘স্থানীয় আদালত’ শব্দ ব্যবহার করা, অন্তর্বর্তী সরকারের সদস্য অনূর্ধ্ব ১৪ জন রাখা, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার না করা ইত্যাদি। এ ছাড়া কিছু সংসদীয় কমিটির সভাপতি বিরোধী দল থেকে করার বিষয়েও একমত হয়েছে বিএনপি। ওদিকে সংসদ সদস্য স্থানীয় সরকারের এখতিয়ারাধীন কোনো প্রতিষ্ঠানের পদে থাকতে পারবেন না, ন্যায়পাল নিয়োগ, স্থানীয় সরকার কমিশন গঠন, সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ পদ্ধতি এবং প্রজাতন্ত্রের সম্পত্তি-সংক্রান্ত সুপারিশের বিষয়ে নীতিগতভাবে একমত হয়েছে দলটি।


বিভাগ পর্যায়ে হাইকোর্টের বেঞ্চ প্রতিষ্ঠার বিপক্ষে বিএনপি: সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, কমিশনের প্রস্তাব হলো যে, স্থায়ী বেঞ্চ যেন বিভাগগুলোতে করা হয়। অষ্টম সংশোধনী ছিল সামরিক শাসক এইচ এম এরশাদের সময়ে, সুপ্রিম কোর্টের বিকেন্দ্রীকরণের জন্য যে বিধান আনা হয়েছিল সংবিধানে, সেটা চ্যালেঞ্জড হয়ে অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের স্থায়ী বেঞ্চ সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর সঙ্গে যায় না এবং সাংঘর্ষিক, যেহেতু এটার বিষয়ে বাতিল করে এটা জাজমেন্ট আছে সেজন্য আমরা বলেছি, সার্কিট বেঞ্চ স্থাপনের জন্য আর্টিক্যাল-১০০ এ প্রভিশন আছে যে, এটা উপরে যেন কম্পালসন একটা আমরা আনতে পারি, জুডিশিয়ারিকে যেন আমরা এখানে কনস্টিটিউশনে একটা প্রভিশন করতে পারি অথবা সাব-সেকশন করতে পারি ওখানে যাতে করে প্রতিবছর প্রয়োজনীয় সংখ্যক সার্কিট বেঞ্চ স্থাপনের জন্য এখানে একটা বাধ্যবাধকতা আরোপ করা যায়। তাতে একই ফাংশনটা করা যাবে। আর সুপ্রিম জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট অথবা ‘জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কমিশন’ একটা কমিশনের প্রস্তাব করেছেন। আমরা এটার বিষয়ে নীতিগতভাবে একমত। বলেছি যে, এটা সংসদে আলোচনা করতে হবে।
গণভোট: এ বিষয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, গণভোট সব বিষয়ে হবে না। সংবিধান সংশোধনের কিছু আর্টিক্যাল থাকে, মানে প্রিয়াম্বল প্রস্তাবনা, মৌলিক অধিকারের ক্ষেত্রে আর্টিক্যাল-৮, ৪৮, ৫৬ এবং ১৪২ যাতে সংবিধান সংশোধনীর বিভিন্ন উপায় বলা আছে, এইগুলো পরিবর্তনে আওয়ামী লীগ সরকার গণভোট বাতিল করে দিয়েছিল, পরে কোর্টে ভার্ডিক্টের মাধ্যমে ১৫তম সংশোধনী যেটাকে চ্যালেঞ্জ হয়েছে, গণভোটকে রি-ইস্টিড করা হয়েছে, সেই বিষয় ছাড়া অন্যান্য বিষয়ে গণভোট হওয়া উচিত না। তবে আমরা প্রভিশন রেখেছি, আমরা প্রস্তাব রেখেছি যে, ভবিষ্যতে পার্লামেন্ট যদি আরও কোনো কোনো আর্টিক্যালের পরিবর্তনের ক্ষেত্রে গণভোটের বিধান রাখতে চায় সেটা ভবিষ্যৎ পার্লামেন্টের বিষয়।


প্রধানমন্ত্রী তিনটি পদে না থাকার প্রস্তাবে না: সালাহউদ্দিন বলেন, এখানে আছে প্রধানমন্ত্রী যাতে তিনটি পদে না থাকেন। প্রধানমন্ত্রী, দলীয় প্রধান এবং সংসদ নেতা। এখানে সংসদে যে মেজরিটি পার্টির একটা সংসদীয় দল হয় তখন সেই দলটি ঠিক করে কে প্রধানমন্ত্রী হবেন। নেসেসারিলি যে, পার্টির চিফ হবেন এমন তো কথা নাই, এরকম উদাহরণ অনেক আছে। কিন্তু হওয়ার প্রভিশনটা অপশন রাখা উচিত। প্রধানমন্ত্রী যিনি হবেন এটা দেখা যায় যে, সংসদের একটা ট্র্যাডিশন যে, প্রধানমন্ত্রী সংসদ নেতা হন। কোনো কোনো দেশে সংসদ নেতাকে আলাদাও করেছে এরকম এমন নজির আছে। কিন্তু এখানে সংসদ নেতা কোনো নির্বাহী ক্ষমতা নেই, সংসদ রাষ্ট্র পরিচালনায় কোনো মন্ত্রণালয় লিড করেন তা নয়, এখানে (সংসদ) সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী অনেকটা অবিচ্ছেদের অংশের মতো।


ঐকমত্য কমিশনের সহ- সভাপতি ও সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, কমিশনের বেশ কিছু সুপারিশের বিষয়ে বিএনপি’র সঙ্গে সামঞ্জস্য আছে, মতের ভিন্নতাও রয়েছে। যেসব বিষয়ে মতভিন্নতা আছে তার অনেকগুলো বিষয়ে বিএনপি তাদের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে আলোচনা করে কমিশনকে জানাবে। 

মতামত'র অন্যান্য খবর