খো লা ক ল ম

নির্বাচন সংস্কার নিয়ে কেন এই ধোঁয়াশা?

লুৎফর রহমান | বিশেষ রচনা
মার্চ ১৫, ২০২৫
নির্বাচন সংস্কার নিয়ে কেন এই ধোঁয়াশা?

আসছে ডিসেম্বরেই ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন হতে যাচ্ছে এমন ইঙ্গিত সরকারের তরফে বার বার দেয়া হচ্ছে। তারপরও এই সময়ে নির্বাচন আয়োজন নিয়ে ধোঁয়াশা কাটছে না। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সন্দেহ-অবিশ্বাস। আদৌ এই সময়ে নির্বাচন হবে কিনা- এমন প্রশ্ন সাধারণ মানুষের মাঝেও। 


একই অবস্থা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেয়া সংস্কার উদ্যোগ নিয়েও। সরকারের মেয়াদ সাত মাস পার হলেও এখনো সংস্কারের বিষয়ে দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য তৈরি হয়নি। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঐকমত্যের জন্য যে জাতীয় কমিশন গঠন করেছেন তা দলগুলোর কাছে সুপারিশ বা মতামত চেয়েছে। সংস্কার কমিশনগুলোর দেয়া সুপারিশের উপর দলগুলো এই মতামত দেবে। ১৩ই মার্চ মতামত দেয়ার শেষ দিনে ৭টি দল তাদের মতামত পেশ করেছে। ১৬টি দল বিস্তারিত মতামত দিতে সময় চেয়েছে। বাকি দলগুলো সাড়া দেয়নি। ঐকমত্য কমিশনের ডাকে দলগুলোর এমন সাড়াতে এটি স্পষ্ট যে, সংস্কারের বিষয়ে দলগুলো এখনো দ্বিধা-দ্বন্দ্বে আছে। এ ছাড়া কমিশন যেভাবে মতামত দিতে বলেছে দলগুলো এতে স্বস্তিবোধ করছে না। ঐকমত্য কমিশন কিছু ক্ষেত্রে সংক্ষিপ্ত আকারে টিক চিহ্ন দিয়ে মতামত চেয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় অনেক দল মতামত দিতে চাইছে না। তারা বিশদ এবং বিস্তারিত মতামত দিতে চায়। বিশেষ করে বিএনপি, জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন, গণতন্ত্র মঞ্চসহ ভোটের মাঠে থাকা দলগুলো বিস্তারিত মতামত দিতে সময় চেয়ে নিয়েছে। সংস্কার কমিশন যেসব সুপারিশ করেছে দলগুলো তাতে কতোটা সায় দেয় তার উপরই নির্ভর করবে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার বিষয়টি। আর এই ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার সঙ্গে নির্বাচন আয়োজনের বিষয়টিও অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। 


নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে সরকার প্রধান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস নানা সময়ে কথা বলেছেন। তিনিও নির্বাচন আয়োজনের বিষয়টিকে অনেকটা সংস্কারের সঙ্গে আপেক্ষিক হিসেবে দেখিয়েছেন। সংস্কারে গুরুত্ব না দিলে এ বছরের শেষের দিকে নির্বাচন হতে পারে এমন আভাস দিয়েছেন। সংস্কার প্রক্রিয়ায় গুরুত্ব দিলে নির্বাচন আগামী বছরের মার্চ থেকে জুনের মধ্যে করা সম্ভব- এমন কথাও বলা হয়েছে। সম্ভবত এমন আপেক্ষিক বক্তব্য আসার কারণেই দলগুলো নির্বাচনের সময় নিয়ে আশ্বস্ত হতে পারছে না। ডিসেম্বরেই নির্বাচন হবে- এমনটা নিয়ে সংশয়ে আছে প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি। দলটির সর্বশেষ স্থায়ী কমিটির বৈঠকে  নেতারা এ বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করে নির্বাচনের জন্য সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রাখার পক্ষে মত দেন। একইসঙ্গে সংস্কার প্রক্রিয়া সমর্থন ও সরকারকে সহযোগিতা দিয়ে যাওয়ার বিষয়েও মতামত দেন নেতারা। জামায়াত, জাতীয় নাগরিক পার্টি, ইসলামী আন্দোলনসহ আরও কয়েকটি দলের অবস্থান অবশ্য বিএনপি’র চাইতে একটু ভিন্ন। এই দলগুলো সংস্কারে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে আবার নির্বাচনও চাইছে। সংস্কার এগিয়ে নিতে কিছুটা সময়ের প্রয়োজন হলে এই দলগুলো ছাড় দিতে রাজি এমনটা তাদের বক্তৃতা বিবৃতিতে প্রকাশ পাচ্ছে। বিএনপিসহ কিছু দল মনে করছে সংস্কারের জন্য যারা সময়ক্ষেপণ করতে চায় তারা সরকারের সঙ্গে লিয়াজোঁ করেই এমনটা করছে। এতে কারও কারও গোপন এজেন্ডা থাকতে পারে। নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় উত্তরণে সময়ক্ষেপণ হলে তৃতীয় কোনো শক্তি সুযোগ নিতে পারে। এ ছাড়া এই কালক্ষেপণ চলমান অস্থিরতা বাড়িয়ে দিতে পারে বলেও এসব দল মনে করছে। এ কারণে তারা দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা চাইছে। দলগুলো এমন দাবি করলেও পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে সংস্কারের বিষয়ে প্রাথমিক একটা ঐকমত্য হওয়ার আগে সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ বা রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে না। ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার বিষয়টি যদি বিলম্বিত হয় তাহলে নির্বাচনের রোডম্যাপ দেয়াও পিছিয়ে  যেতে পারে। 
সমপ্রতি জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম দুটি আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন, বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও পুলিশিং ব্যবস্থায় তিনি মনে করেন না, একটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব হবে। তার এই বক্তব্যের বিষয়ে কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এভাবে চলতে থাকলে তাহলে কি নির্বাচন হবে না। বিএনপি’র সর্বশেষ স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। 


বৃহস্পতিবার গণঅধিকার পরিষদের ইফতার মাহফিলে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ জনগণের চাহিদা অনুযায়ী সংসদ নির্বাচনের পরিষ্কার রোডম্যাপ ঘোষণা করতে সরকারের প্রতি তাগিদ দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমাদের একটি বিষয়, সংস্কার প্রস্তাব, সংস্কার প্রস্তাবের ওপর ঐকমত্য পোষণ করা এবং জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রস্তাব গ্রহণ করা, সেগুলো বাস্তবায়ন করা দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার। এটা স্বল্পমেয়াদি, দীর্ঘমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি সংস্কার বাস্তবায়নের বিষয়।


জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা সারজিস আলমের একটি বক্তব্যও নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক তৈরি করেছে।‘শেখ হাসিনার বিচারের আগে কেউ যেন নির্বাচনের কথা না বলে’ তিনি এমন বক্তব্য দেয়ার পর অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতারা প্রশ্ন তুলেছেন হাসিনার বিচারের বিষয়টি তো দীর্ঘ প্রক্রিয়া। এটি শেষ না হলে নির্বাচন করা যাবে না- এমনটি বললে তো নির্বাচনের জন্য অন্তহীন অপেক্ষায় থাকতে হবে। জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম অবশ্য পরে তার বক্তব্যের ব্যাখ্যায় বলেছেন, শেখ হাসিনার বিচারের গুরুত্ব বোঝাতেই তিনি এমনটা বলেছেন। নির্বাচনের সঙ্গে তার এই বক্তব্যের কোনো সম্পর্ক নেই। সরকার এবং গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয়া দল ও পক্ষ থেকে নির্বাচন বিষয়ে এমন ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান প্রকাশের কারণেই হয়তো নির্বাচন নিয়ে দলগুলোর মধ্যে সৃষ্ট ধোঁয়াশা কাটছে না। 


ওদিকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন যে মতামত চেয়েছে তা নিয়েও দলগুলোর মধ্যে দ্বিধা রয়েছে। সংস্কার প্রশ্নে প্রায় সব রাজনৈতিক দলই একমত। তবে এর প্রক্রিয়া, এবং ব্যাপ্তি নিয়ে মতভেদ আছে। বিশেষ করে সংবিধান ও নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারে দলগুলো ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে ভাবছে। ঐকমত্য কমিশন এসব বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আকারে যে মতামত চেয়েছে দলগুলো তার সরাসরি উত্তর দিতে চাইছে না। বরং এসব বিষয়ে বিস্তারিত মতামত এবং নিজস্ব প্রস্তাব জুড়ে দিতে চাইছে। সরকার যেসব খাতে সংস্কারের জন্য কমিশন গঠন করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপিও এসব খাত সংস্কারের বিষয়ে ছায়া কমিটি গঠন করে কাজ করছে। দলটির একটি সূত্র জানিয়েছে, শুধুমাত্র সংবিধান সংস্কারের জন্য গঠিত কমিটি প্রায় হাজার পৃষ্ঠার সুপারিশ ও মতামত তৈরি করেছে। ঐকমত্য কমিশনে দলীয় এই মতামতও পেশ করা হবে। 


বৃহস্পতিবার মতামত দেয়ার শেষ দিনে সাতটি মাত্র দলের মতামত পেয়েছে কমিশন। বিএনপি, জামায়াত, ইসলামী আন্দোলনসহ ১৬টি দল মতামত দিতে সময় চেয়েছে। আমন্ত্রণ পাওয়া বাকি ১৪টি দল কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে এসব দলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। 
মতামত পেশ করা সাতটি দলের মধ্যে আছে, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, জাকের পার্টি, ভাসানী অনুসারী পরিষদ, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম ও ‘আমজনতার দল’।
এ দলগুলোকে নিয়ে প্রাথমিকভাবে আলোচনা শুরু করা হতে পারে- ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে এমনটা জানানো হয়েছে। এ পর্যায়ে মতামত দেয়া দলগুলোর সঙ্গে আলাদা ভাবে আলোচনা করবে কমিশন। 


গত ১০ই মার্চ মতামত চেয়ে ৩৭টি রাজনৈতিক দলের কাছে ‘স্প্রেড শিট’ পাঠায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এই সুপারিশের বিষয়ে ১৩ই মার্চের মধ্যে রাজনৈতিক দল ও জোটকে মতামত জানাতে বলা হয়েছিল। 
বিএনপিদলীয় সূত্র জানায়, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন যেসব সুপারিশ চেয়েছে, সেসব নিয়ে দলীয় পৃথক কমিটি কাজ করছে। পূর্ণাঙ্গ মতামত তৈরি হতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে। রিপোর্ট তৈরি হওয়ার পর দলটি যুগপৎ আন্দোলনের দল ও জোটের সঙ্গে কথা বলবে। এরপরে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে চূড়ান্ত করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে রিপোর্ট জমা দেবে। 
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের একজন সদস্য জানিয়েছেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে মতামত দেয়ার জন্য তারা সময় চেয়ে নিয়েছেন। কিছু বিষয়ে তারা পূর্ণাঙ্গ মতামত দেবেন। তবে যেসব বিষয়ে একমত, সেখানে টিক চিহ্ন দিয়ে সম্মতি জানানো হবে। 


ঐকমত্য কমিশন দলগুলোর কাছে যে ছক পাঠিয়েছে সেখানে প্রতিটি সুপারিশের ক্ষেত্রে দুটি বিষয়ে মতামত চাওয়া হয়েছে। এরমধ্যে প্রথমটি হলো- সংশ্লিষ্ট সুপারিশের বিষয়ে একমত কিনা। এতে তিনটি বিকল্প রাখা হয়েছে, সেগুলো হলো-একমত, একমত নই এবং আংশিকভাবে একমত। এর মধ্যে যেকোনো একটিতে টিক চিহ্ন দিয়ে মতামত জানাতে বলা হয়েছে। দ্বিতীয়তটি হলো- প্রতিটি সুপারিশের বিষয়ে সংস্কারের সময়কাল ও বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে মতামত চাওয়া হয়েছে। এজন্য ছয়টি ঘর রয়েছে, সেগুলো হলো: সংস্কারের সময়কাল ও বাস্তবায়ন- নির্বাচনের আগে অধ্যাদেশের মাধ্যমে, নির্বাচনের আগে গণভোটের মাধ্যমে, নির্বাচনের সময় গণভোটের মাধ্যমে, ‘গণপরিষদের মাধ্যমে’ ‘নির্বাচনের পরে সাংবিধানিক সংস্কারের মাধ্যমে’ এবং গণপরিষদ ও আইনসভা হিসেবে নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে। এসব ঘরের যেকোনো একটিতে টিক চিহ্ন দিয়ে মতামত দিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিটি সুপারিশের পাশে দলগুলোর মন্তব্য দেয়ার একটি জায়গা রাখা হয়েছে।


এই টিক চিহ্ন দিয়ে মতামত দেয়ার বিষয়েও অস্বস্তি আছে দলগুলোর মাঝে। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকের মতে টিক চিহ্ন চেয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে অবমাননা করা হয়েছে। এজন্য তারা কমিশন থেকে সময় নিয়েছেন বিস্তারিত মতামত দেয়ার জন্য। 


ওদিকে রাষ্ট্র সংস্কারের ‘জুলাই সনদ’  ঘোষণা নিয়েও টানাপড়েন কাটেনি। সংস্কারে ঐকমত্যের সঙ্গে ‘জুলাই সনদ’-এর বিষয়েও দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য তৈরির কাজ চলছে। এই সনদ কার্যকর করতে জোর দাবি জানিয়ে আসছে জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয়া শিক্ষার্থীদের দল ও সংগঠন। সদ্য গঠিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি আগামী নির্বাচনের আগেই এই সনদ কার্যকর দেখতে চায়। সম্প্রতি জাতীয় নাগরিক পার্টির সংবাদ সম্মেলনে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, প্রধান উপদেষ্টা ও সেনাপ্রধান চলতি বছরের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলেছেন। এনসিপি এ বিষয়ে কেন স্পষ্ট বক্তব্য দিচ্ছে না? এর উত্তরে এনসিপি’র আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, নির্বাচনের সময়ের চেয়েও তারা প্রেক্ষাপটের দিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। ‘জুলাই সনদের’ কথা প্রধান উপদেষ্টা নিজে বলেছেন। সংস্কারের বিষয়ে ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটা সনদ তৈরি হবে। যেখানে বাংলাদেশের রূপরেখা কেমন হবে, কী কী সংস্কার এই সময়ে করা হবে, কী কী সংস্কার ভবিষ্যতে করা হবে, কী কী সংস্কারের ধারাবাহিকতা থাকবে রাজনৈতিক দলগুলোকে সেই কমিটমেন্ট জনগণের কাছে দিতে হবে। 


তার আগে আমরা কীভাবে নির্বাচনের দিকে যাবো? সেই কথাটাই আমরা বলছি। এটা যাতে আমরা ভুলে না যাই। বিচার, সংস্কার, পরিবর্তনের কমিটমেন্ট এগুলোর মধ্যদিয়ে যাতে আমরা নির্বাচনের দিকে যাই। সর্বশেষ জাতীয় নাগরিক পার্টির ইফতার মাহফিলে দেয়া বক্তব্যেও নাহিদ ইসলাম নির্বাচন ও সংস্কার প্রসঙ্গে কথা বলেন। তবে নির্বাচনের সময় নিয়ে তার বক্তব্যে স্পষ্ট কোনো দাবি ছিল না। তিনি বলেন, প্রয়োজনীয় সংস্কার করেও নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন করা সম্ভব। 


জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকে আরেকটি বিষয় সামনে আনা হয়েছে। আর তা হলো গণপরিষদ নির্বাচন। দলের আত্মপ্রকাশের দিনেও নেতারা এই দাবি তুলেছেন। পরেও এ নিয়ে তারা কথা বলেছেন। বিএনপি সহ অনেক দল অবশ্য এ দাবির প্রতি সমর্থন নেই বলে জানিয়েছে। 


গণপরিষদ নির্বাচন ও সংবিধান পরিবর্তনের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এনসিপি’র আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, গণপরিষদ নির্বাচন মূলত রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও ঐকমত্যের ওপর নির্ভর করবে। যদি সেই ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়, তাহলে কাঙ্ক্ষিত সময়ের মধ্যেই গণপরিষদ ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন একসঙ্গে করা সম্ভব। 


রাজনৈতিক দল গঠনের পর নির্বাচন, সংস্কারসহ রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় সরাসরি যুক্ত হয়েছে এনসিপি। সামনে জাতীয় ঐকমত্যসহ নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে চায় দলটি। এ অবস্থায় সব দলের মতামতের ভিত্তিতে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা, দলগুলোর দ্বিধা ও সংশয় দূর করে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের রোডম্যাপ ঘোষণাই এখন সরকারের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। 

বিশেষ রচনা'র অন্যান্য খবর