‘শত্রু তুমি বন্ধু তুমি তুমি আমার সাধনা’

ড. হাসনান আহমেদ | বিশেষ রচনা
ডিসেম্বর ২৮, ২০২৪
‘শত্রু তুমি বন্ধু তুমি তুমি আমার সাধনা’

লিখতে বসলেই লেখায় কোনো গান বা কবিতার প্রয়োগ দেখে বন্ধু-বান্ধব ও সহকর্মীরা সুযোগমতো ভর্ৎসনা করতে ছাড়েন না। নিবন্ধ লিখতে গেলেই ছোটবেলায় শেখা গান ও কবিতা উথলে ওঠে। সুর মনের মধ্যে প্রসঙ্গের দ্যোতনার সৃষ্টি করে; প্রবন্ধের অলঙ্কার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যে গানের কলিটা শিরোনামে দিয়েছি, তার পুরো লাইনটা এরকম: ‘শত্রু তুমি বন্ধু তুমি, তুমি আমার সাধনা। তোমার দেয়া আঘাত আমার দেয় যে মধুর বেদনা...’। গানের সঙ্গে আমাদের দেশের কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের বা কোনো সম্প্রদায়ের অবস্থা ও দশা হুবহু মিলে যায়। সোজাকথায় বললে, গানটা হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক আওয়ামী সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে গাইলে এখন ভালো মানায়। সে-কথা ও ব্যক্তিগত জীবনের গল্প আজ কিছুটা বলি। স্কুল ও কলেজ জীবনে আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের বেশির ভাগ ছিল হিন্দু সম্প্রদায়ের। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনেও তাই; এমনকি আমার রুমমেট বেছে নিয়েছিলাম একজন হিন্দু বন্ধুকে। জীবন-সায়াহ্নে পৌঁছে গেছি, এখনো হিন্দু বন্ধু বেশি। বন্ধুদের অনেকেই বর্তমানে ভারতবাসী। তারা বাংলাদেশে এলে আমার বাড়িতে এসে থাকে; আমিও ভারতে গেলে তাদের কারও বাড়িতে গিয়ে উঠি। কলকাতার আশপাশে তাদের বসবাস। অনেকে একসঙ্গে বসে আড্ডা জমাই। জাত ভেদের বিভাজন আমাদের বিন্দুমাত্রও স্পর্শ করতে পারে না। ছাত্র বয়সে আব্বার ব্যবসায়ে সাহায্য-সহযোগিতা করতে গিয়ে দেখলাম আব্বার প্রায় সব ব্যবসায়ী মহাজন হিন্দু সম্প্রদায়ের। একদিন কারণ জিজ্ঞেস করায় আব্বা বললেন, এরা ব্যবসা বোঝে, ব্যবসাতে প্রতারণা করে না, তাই। যদিও স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সবাই পাওনা টাকা না দিয়ে আমাদেরকে পথে বসিয়ে ভারতে চলে গেছে। আমার বিশ্বাস, সব দেশেই বিভিন্ন ধর্মের মানুষ একসঙ্গে বসবাস করে, সবাই দেশের নাগরিক; সে মতো সবাই সম-নাগরিক অধিকার ভোগ করবে, দেশের আইন সবার জন্য সমান। এখানে জাত-পাতের ভেদাভেদ অপ্রয়োজনীয়। সুতরাং কাউকে বিশেষভাবে নিরাপত্তা দেয়ারও প্রয়োজন পড়ে না। আমাদের দেশে নিশ্চয়ই কোথাও না কোথাও গলদ আছে; এটা উদ্ঘাটনের বেশি প্রয়োজন।
 

চাকরির সুবাদে আমি এলাকার বাইরে আসার পর কয়েকজন বন্ধু এদেশে অত্যাচারের কথা বলে এবং কেউ কেউ ভারত রাষ্ট্রকে নিজের রাষ্ট্র ভেবে ওপারে পাড়ি জমায়। তারা এখন বলে, বাংলাদেশ ছেড়ে তারা ভুল করেছে। মূল ভারতীয়রা তাদের কুনজরে দেখে; ভারতে সাম্প্রদায়িক প্রতিহিংসা বেশি, অধিকাংশ লোকজন হাড়কিপটে- এসব ওপারে যাওয়া বন্ধুদের বলা কথা। আমি শুনে হেসে উড়িয়ে দিই। এদেশের হিন্দু সম্প্রদায় যে দলকে স্বাধীনতার সময় বন্ধু ভেবেছিল, তারাই সব সময় তাদের প্রতি অত্যাচার ও জমিজমা দখল করেছে। ভারত রাষ্ট্রটা হিন্দু সম্প্রদায়ের খুব পছন্দের। আওয়ামী লীগ ভারতের গোলামী করে, তাই হিন্দু সম্প্রদায় আওয়ামী লীগের বন্ধু। সম্পদ লুটের সময়ে তারাই আবার শত্রুতে পরিণত হয়েছে। একই রাজনৈতিক দল নিজে দইটা চেটে খেয়ে অন্য কোনো পরাজিত দলের মুখে হাত মুছে দিয়ে নিজেরা ধোয়া তুলসিপাতা সাজে। এতটা বছরে একথা ওপেন সিক্রেট হয়ে গেছে। কোনো কোনো হিন্দু নেতার মুখেও টিভি চ্যানেলে বক্তৃতায় এ সত্য কথা স্বীকার করতে শুনেছি। একথা ভারত সরকার অবহিত হলেও এখন তারা জিভ ঘুরিয়ে ডাহা মিথ্যা বিশ্বব্যাপী রটায় কিসের স্বার্থে? স্বার্থটা হচ্ছে ‘গোলাম’ দেশছাড়া, তাই স্বার্থ হাতছাড়া। হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা আওয়ামী লীগ ও ভারতকে দেবতা জ্ঞানে মান্য করে চলে। আমার মনে হয় আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক সুবিধা নেয়ার জন্য যুদ্ধের পর বিভিন্ন দিক থেকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কথা উঠলেও তারা চুপ করে যায়। দেশ গড়তে নিজেদের অযোগ্যতা, দুরবগ্রহ, দুরভিসন্ধি ও ব্যর্থতা ঢাকতে দোষ বিএনপি-জামায়াতের ঘাড়ে চাপায়। এদেরকে বিশ্ব-মুরুব্বিদের কাছে জঙ্গি-মৌলবাদী বানিয়ে নিজ স্বার্থ হাসিল করে। 
 

অনেক মানুষই আওয়ামী লীগের স্বাধীনতা যুদ্ধের আগের কথা ও যুদ্ধের পরের কাজ দেখে তাদের মতলববাজি ও প্রতারণা বুঝতে পেরে নৈতিকতার কারণে দলত্যাগী হয়েছে। বাঁধ দিয়ে নদীর পানিকেই অনেক সময় বশে আনা যায় না, মানুষের মনকে তো নয়ই। আমি এটা সাইকোলজিক্যাল ও সোসাইটাল পয়েন্ট অব ভিউতে বিশ্লেষণ করে অনেকবার দেখেছি। পরবর্তীতে জামায়াতের সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করে, পাশে বসিয়ে বক্তৃতা দেয়, রাষ্ট্রক্ষমতায় বসার জন্য জামায়াতের কোনো নেতার পা ছুঁয়ে সালাম করে, আবার দীর্ঘদিন পর তাদের নেতাদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করতেও দ্বিধাবোধ করে না। সবকিছুই দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ লোক মুসলমান হওয়ায় দেশকে জঙ্গি ও মৌলবাদীদের দেশ সাজিয়ে বিশ্ববাসীকে বুঝিয়ে ভারতের স্বার্থ রক্ষা করা ও সিংহাসনে বসে থাকার নিম্ন-মানের ফন্দি-ফিকির। 
 

ভারতে দলবলসহ পালিয়ে যাবার আগে গত্যন্তর না দেখে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করে নিজেদের রাজনীতির পালে অনুকূল হাওয়া লাগাতে গিয়েও ব্যর্থ হয়েছে। মানুষ একই টেকনিক বারবার খায় না। আচ্ছা, আমাদের দেশে খ্রিষ্টান ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ও তো সংখ্যালঘুর আওতায় পড়ে; তারা কি কখনো সংখ্যালঘু অত্যাচারের কথা বলে? এদেশের হিন্দু ধর্মের কিছু লোক ভারতের শক্তিতে ধরাকে সরা জ্ঞান করে ও আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। আওয়ামী লীগ ভারতকে ‘দাদাগিরি’ করতে সুবিধা দেয়াতে এদেশের কুমতলবি দাদারা বিভিন্ন প্রকার দুর্নীতি, অন্যায় ও অপরাধ করে, এদেশের যত অসত্য-কুকথা ভারতের কানে লাগায়। পূজার মৌসুমে ভারতের দান-দক্ষিণা এনে খাচ্ছে। এখন আওয়ামী লীগের পতনে তাদের প্রতি কোথাও কোথাও সাধারণ মানুষ প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নিতে পাল্টা-আক্রমণ করেছে। এটা হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি আক্রমণ নয়, আওয়ামী বন্ধুদের কুকর্মের বিরুদ্ধে আক্রমণ। তোমরা দুর্নীতি-দুষ্কর্ম করবা আওয়ামী রাজনীতির ব্যানারে, আবার আক্রান্ত হলেই সংখ্যালঘুর ওপর অত্যাচার বলে চালিয়ে দেবে এবং দল গুছিয়ে স্লোগান হাঁকবে ও দেশে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে, এটা কেমন সমীকরণ? এদেশের সাধারণ হিন্দু সম্প্রদায়ের এ বিষয়টি ভালোভাবে বুঝতে হবে। সতীর্থ রাজনীতিকদের হাতের ঘুঁটি হলে চলবে না। একমাত্র আওয়ামী লীগার ছাড়া মুসলমান-হিন্দুরা একে অপরের বন্ধু হয়ে সেই আদিকাল থেকে এদেশে একসঙ্গে বসবাস করে আসছে। তারা কিংবা তাদের পূজার ঘর কখনো আক্রান্ত হলে রাজনৈতিক স্বার্থের মারপ্যাঁচে আওয়ামী লীগ সে-কাজ করে আসছে। আমি হিন্দু বন্ধুদের কাছ থেকে শুনে ও দেখে ভেতরের অনেক খবর রাখি; আবার ‘আমার ফাঁসি চাই’ বইতেও পড়েছি। সাধারণ হিন্দুরা মনে মনে মতলববাজ ও ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চাইলে প্রকৃতির নিয়মেই তাদেরকে ভুগতে হবে। তারা যেকোনো দলের রাজনীতি করলে কোনো বাধা নেই। কিন্তু রাজনৈতিক দলের মারামারি সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার বলে চালানো যাবে না। একমাত্র আওয়ামী লীগ ছাড়া কেউ তাদের অত্যাচার করে না। তাদেরকেও অন্যান্য জাতি-সম্প্রদায়ের মতো নাগরিক অধিকার নিয়ে এদেশে বসবাস করতে হবে। এদেশকে ভালোবাসতে হবে। তারা অন্যায় দুর্নীতি করলে নিজেকে আইনের ঊর্ধ্বের কেউ ভাবা যাবে না। বিষয়টি তারা ও ভারত সরকার সাম্প্রদায়িকভাবে নিচ্ছে, দেশ-বিদেশে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। মূল কথা তাদের সেবাদাস ও দাসী দেশছাড়া, এ ক্ষোভ তারা মিটাতে গিয়ে ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে চাচ্ছে। ভারত এদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাচ্ছে। এতে বাংলাদেশ যদি অশান্তিতে থাকে, ভারতও অশান্তিতে থাকবে। অতি সহজে শেখ হাসিনাকে এদেশের গদিতে তারা আর বসাতে পারবে না বলে আমার বিশ্বাস। আবার পারতেও পারে; বাংলাদেশিরা আত্ম-বিস্মৃত জনগোষ্ঠী। এদের পূর্বানুমান করা কঠিন। সাভারে রানা প্লাজা ধসে গার্মেন্টস শ্রমিকদের নির্মম মৃত্যুর পর কেঁচো খুঁড়তে বেরিয়ে এলো যে, জমিটা হিন্দুদের; দখল করেছিল আওয়ামী লীগ নেতা। অবৈধভাবে বিল্ডিং তৈরি করেছিল। এমন হাজার হাজার সত্য দেশব্যাপী গ্রামে-গঞ্জে ছড়িয়ে আছে। জমি দখল ও মন্দির ভাঙায় দেশছাড়া হলে বুঝতে হবে মূল হোতা আওয়ামী-বন্ধুর শত্রুতা। কাউকে  কোনোদিন বিচারের আওতায়ও আনা হয় না। আমার দেখা চোখে সব হিন্দুই কিন্তু অত্যাচারের কারণে ভারতে দেশান্তরি হয়নি; অনেকে ভারতকে নিজের আপন ঠিকানা-স্বর্গরাজ্য ভেবেই গেছে। অনেককে দেখেছি এদেশে অপকর্ম করে শাস্তির ভয়ে পালিয়ে ভারতে চলে গেছে। আবার অনেকে এদেশ থেকে কূটকৌশল করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে; পি.কে. হাওলাদার তাদের একজন। এখনো পর্যন্ত এদেশের অধিকাংশ হিন্দু বাস করে এদেশে, আয় রোজগার করে এদেশে, সম্পদ গড়ে ভারতে। ভারতকে তাদের নিরাপদ স্থান বলে গণ্য করে। আমার অনেক পরিচিত জন, বন্ধুবান্ধবও তাই করেছে। যারা রাজনৈতিক ফায়দা লোটা কিংবা ব্যক্তিস্বার্থের কারণে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন করেছে; মিথ্যা সংখ্যালঘু নির্যাতনের ও জঙ্গি-মৌলবাদী দেশ নামাবলীর ট্রাম্প কার্ড ব্যবহার করে দেশ-বিদেশে ছড়িয়েছে বা এখনো ছড়াচ্ছে, ভারতের সেসব সেবাদাস ও সেবাদাসী এদেশ লুটপাট ও গণহত্যা চালিয়ে তাদের মনিব-বন্ধুর কোলে নিরাপদ আশ্রয়ে ঠাঁই নিয়েছে। হিন্দু ধর্মেই বর্তমান সময়কে ‘কলিকাল’ বলে। কলিকালের এ-কি আত্মপ্রবঞ্চিত-আত্মবিনাশক ডাহা মিথ্যাচারের রাজনীতি? বিশ্বের ইসলামবিদ্বেষী, থিও-পলিটিক্যাল ভাবধারায় লালিতপক্ষ এসব অপপ্রচারকে মুসলমান দমনের মোক্ষম-ধন্বন্তরি অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। হায় হতশ্রী, ধরণী দ্বিধা হও! চরিত্রহীন রাজনীতিক হলে বিষয়টা হয়তো মেনে নিতে পারতাম; শিক্ষক হয়ে এ প্রতারণা মানি কী করে? 
 

এদেশে হিন্দু সম্প্রদায়কে ডুবাচ্ছে তাদের কূটচালসিদ্ধ রাজনৈতিক সতীর্থরা এবং অন্ধ ভারতপ্রীতি। বৃটিশ শাসনামলের শুরু থেকে ভারতের হিন্দুত্ববাদী চিন্তা-চেতনা মুসলমানদের প্রতি অত্যাচার ও মুসলিমবিদ্বেষী আচরণ ভারতবর্ষকে দ্বি-জাতি তত্ত্বে বিশ্বাসী করতে মুসলমানদের বাধ্য করে। কোনো জাতি বা সম্প্রদায় নিগৃহীত, নিষ্পেষিত হলে অচ্ছুত ও যবন সম্প্রদায় হিসেবে হিন্দুত্ববাদী ও বহুত্ববাদী ব্রাহ্মণ্য সম্প্রদায়ের বর্ণবাদী সমাজের সঙ্গে বসবাস করতে বেশিদিন রাজি হয় না। নিজেদের সম্মান ও অস্তিত্বকে বজায় রাখার জন্য পৃথক হতে বাধ্য হয়। তাই পাকিস্তান স্বাধীন হয়েছিল এবং তারপর বাংলাদেশও স্বাধীন হয়। অনুসন্ধিৎসু পাঠকবর্গকে সেই বৈদিক যুগ থেকে ভারতবর্ষের ইতিহাস অতি সতর্কভাবে পড়ে দেখার অনুরোধ করছি। 
 

আমি চার বছর ভারতের মধ্যপ্রদেশের এক বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছি। মুসলমানদের প্রতি তাদের অবজ্ঞা, বৈষম্য, অত্যাচার, নিগ্রহ ও ঘৃণা আমি স্বচোখে দেখেছি ও নিজেও ভুগেছি। নিজের চোখ ও কানকে অবিশ্বাস করি কী করে? আমাদের দেশের কোনো কোনো রাজনৈতিক দল এদেশের স্বাধীনতাকে কোনো রাষ্ট্র-গোষ্ঠীর চরণে বিসর্জন দিয়ে নিজেদেরকে স্বাধীনতার রক্ষক বলে দাবি করে, আবার সে রাষ্ট্র-গোষ্ঠীর সেবাদাস ও দাসী হয়ে কাজ করে। আওয়ামী লীগও এ স্বাধীন দেশকে দিনে দিনে ভারতের হাতে হাওলা করে দিতে চায়। এদেশের ভাত-খাওয়া লোকজন অনেক সচেতন। বাস্তবে বিজ্ঞাপন ও মুখ-দালালি প্রচারণার সঙ্গে কাজের এ বৈপরীত্য ছাত্র-জনতার বিপ্লব ও দাস-দাসীর পলায়ন এবার সব গোমর ফাঁস করে দিয়েছে। এদেশীয় প্রভু-বন্ধুকে হারিয়ে হিন্দু ধর্মের ঠগবাজ লোকজন এখন দিশাহারা। তাদের ভুল ভারতকে ভালোবাসতে গিয়ে তাদের এদেশীয় ভারতীয় সেবাদাসকে বন্ধু হিসেবে বরণ করে নেয়া। হিন্দু ধর্মের লোকজনের উচিত ছিল অন্যান্য সম্প্রদায়ের মতো এদেশে নিজেদের অস্তিত্ব, নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত করা। তা না করে তারা ভাত খাবে এখানে আর কুলি ফেলবে গিয়ে পর-নাগরের উঠানে, তা-কি হয়? এখন তো জামায়াতের ওপর দোষ চাপিয়ে, দেশের সবাইকে জঙ্গি-মৌলবাদী বলে সারা বিশ্বে মিথ্যা মুখ-দালালি করে আর কাজ হবে না, পদেও থাকা যাবে না। এদেশকেই নিজের স্বাধীন দেশ ভেবে ভালোবাসতে হবে।
 

এদেশের জনগণ প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে দুটো স্বাধীন দেশ হিসেবে সম-মর্যাদায় বন্ধুত্বপূর্ণ মন নিয়ে সম্পর্ক বজায় রাখতে চায়; ভারত সরকার খোলা মন ও সত্য নিয়ে এগিয়ে এলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। রাজনীতির মাঠে সব সময় পোষা গোলামকে একই পদে ধরে রাখা সম্ভব নয়; তা অলীক কল্পনাও বটে। হিন্দু সম্প্রদায়কেও সে বাস্তবতা বুঝতে হবে। ্ত
 

লেখক: অধ্যাপক, সাহিত্যিক, গবেষক ও শিক্ষাবিদ; প্রেসিডেন্ট, জাতীয় শিক্ষা-সেবা পরিষদ;
pathorekhahasnsn.com

 

বিশেষ রচনা'র অন্যান্য খবর