স ম্পা দ কী য়

ঢাকা-কাঠমান্ডুর মিল-অমিল

কাজল ঘোষ | মতামত
সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৫
ঢাকা-কাঠমান্ডুর মিল-অমিল

রাজনীতিতে শেষ বলে কিছু নেই। কথাটি ফের প্রমাণিত হলো নেপালে জেন-জি বিস্ফোরণে। বছর দেড়েক আগে নেপাল বেড়াতে গিয়েছিলাম। বেড়ানোর ফাঁকে সেখানকার একাধিক অটোচালক, ট্যাক্সিচালক, হোটেল বয়দের সঙ্গে কথা বলেছি। জানার চেষ্টা করেছি, নেপাল কেমন চলছে? প্রথম যে বার নেপাল যাই তখন রাজার শাসন বিদায়ে মাওবাদী প্রচণ্ড ক্ষমতায়। কতোটা প্রচণ্ডতা থাকলে একটি রাজপরিবারের দীর্ঘ শাসনকে বিদায় জানিয়েছিলেন তার নেতৃত্বে লড়াইয়ের মাধ্যমে। তবে এরপর নেপাল আর স্থিতিশীল হয়নি। সাধারণ মানুষ অস্থির, ত্যক্ত-বিরক্ত মনে হয়েছে প্রচণ্ড থেকে ওলি পর্যন্ত এটাই মনে হলো। তাদের সহজ কথা, ‘রাজা বহুত আচ্ছি থি?’ আমি হিসাব মিলাতে পারছিলাম না। পারিবারিক ডাইন্যাস্টি ভাগাভাগিকে মানুষ কেন বলছে, আচ্ছি থি? তাহলে গণতান্ত্রিক শাসক সুফল বা স্বস্তি দিতে পারেনি। আমি যে সময় নেপাল সফর করেছি তখনো বাংলাদেশ পরিস্থিতি বদলায়নি। আন্দোলন চলছিল কোটা নিয়ে। শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামছে ধারাবাহিকভাবে। তবে জুলাই থেকেই পরিস্থিতি বদলাতে থাকে। ১লা থেকে ৩৬শে জুলাই। বাংলাদেশ সাক্ষী হয় নতুন ইতিহাসের। প্রশ্ন আসে, নেপালেও কী বাংলাদেশের হাওয়া লেগেছে। ধারাবাহিকভাবে দেখলে লক্ষ্য করা যায়, দক্ষিণ এশিয়া জুড়েই অস্থিরতা। প্রথমে শ্রীলঙ্কা দিয়ে শুরু। তারপর বাংলাদেশ। আর সবশেষ নেপাল। দেশটি এখন সেনা কব্জায়। আপদকালীন সরকার তৈরির কাজ চলছে। সেখানেও রাষ্ট্র মেরামতের জোর দাবি নিয়ে রাস্তায় আছে তরুণরা। মাত্র দু’দিনের সহিংসতায় কমপক্ষে ২২ জন প্রাণ হারান এবং শত শত মানুষ নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে আহত হন। সরকারের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রবেশাধিকার বন্ধের চেষ্টাকে এই সহিংসতার তাৎক্ষণিক কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে এটি ছিল হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত দেশটির প্রায় তিন কোটি মানুষের দীর্ঘদিনের ক্ষোভের বিস্ফোরণ, যা জন্ম নিয়েছে রাজনৈতিক দুর্নীতি ও ব্যাপক বৈষম্যের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশের পরিবর্তনের ঢেউ লেগেছে নেপালেও এটি জোর আলোচনা। এখানে ইন্টারনেট বন্ধ হয়েছিল, নেপালেও তাই। দু’ জায়গাতেই নেতৃত্বে তরুণরা।

মতামত'র অন্যান্য খবর