ডনাল্ড ট্রাম্প সম্পর্কে যত লেখা হয়, তার মধ্যে খুব কম লেখা হয় তার কবিতা প্রেম নিয়ে। তবে একটি কবিতা আছে যা তিনি ভালোবাসেন এবং প্রায়ই জনসমক্ষে আবৃত্তি করেন। গত মাসে হোয়াইট হাউস একে সংক্ষিপ্ত চলচ্চিত্রে রূপান্তরিত করে। কবিতার নাম ‘দ্য স্নেক’। মূলত অস্কার ব্রাউন জুনিয়রের লেখা গান এটি। গানটি ট্রাম্পের মূল দর্শনের কাছাকাছি। কবিতার শুরু হয় একটি আধা জমে থাকা সাপ দিয়ে। সাপটি ‘ভেজা শিশিরে ঢাকা’ অবস্থায় আছে। সে উষ্ণতা চেয়ে সাহায্য প্রার্থনা করছে। তার প্রার্থনা শুনে এক কোমলমনের নারী আড়ম্বরপূর্ণভাবে ঢেকে রাখে, মধু ও দুধ খাওয়ায় এবং তার ‘সুন্দর ত্বক’ ছুঁয়ে আদর করে। কিন্তু সাপ ধন্যবাদ না দিয়ে তাকে কামড় দেয়। এ বিষয়ে গার্ডিয়ানে মন্তব্য প্রতিবেদনে আদিত্য চক্রবর্তী বিশ্লেষণ করেছেন এভাবে- এই কবিতা ট্রাম্পিজমের সারমর্ম। বাইরে থেকে আসা কারও প্রতি অতিরিক্ত বিশ্বাস করলে, সে কামড় দিয়ে প্রতিদান দেয়। ট্রাম্পের ব্যবসা, রাজনীতি এবং অভিবাসন নীতি- সব ক্ষেত্রেই এটি প্রতিফলিত হয়। হোয়াইট হাউসের ভিডিওতে তার পাঠের সঙ্গে সাদা ও কালো মানুষের হাতে হাতকড়া পরার ছবি ওভারল্যাপ করা হয়েছে। জাতিসংঘে ট্রাম্পের ভাষণও এই কবিতার মতোই। এটি বৃটিশ প্রশাসন এবং ট্রাম্পের সম্পর্কের চিত্র- যেন একটি দুষ্ট সাপের সঙ্গে সম্পর্ক। গত সপ্তাহে ট্রাম্প ছিলেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ের স্টারমারের সম্মানিত অতিথি। উইন্ডসর ক্যাসলে ব্যাংকুয়েট করলেন। রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন। কিন্তু পরবর্তী ফ্লাইটে তিনি তার হোস্টকে আক্রমণ করলেন এবং বৃটেনকে ‘পুরনো বিশ্বের নরক’ হিসেবে উল্লেখ করলেন। স্টারমার এক বছর ধরে ট্রাম্পকে যতটা সম্ভব ঘিরে রেখেছেন। এর মধ্যে আছে দ্বিতীয় রাষ্ট্রীয় সফর, ক্যাসলে রাত, চেকার্সে দিনের সাক্ষাৎ। এর বিনিময়ে বৃটেন কম শুল্ক এবং উচ্চ বিনিয়োগ পেয়েছে। কিন্তু সাধারণ নাগরিকরা যদি প্রকৃত চুক্তি জানতো, তারা রুষ্ট হতেন। প্রযুক্তি বিনিয়োগের বিষয়টি ৩১ বিলিয়ন বিনিয়োগ মূলত ডাটা সেন্টার ও মেশিনের জন্য। স্থায়ী কর্মী খুব কম- প্রতিটি ডাটা সেন্টারে মাত্র ৪০ জন কর্মী কাজ করবেন। ডাটা সেন্টার মূলত তথ্য সংরক্ষণে ব্যবহৃত হবে, নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করবে না। তা বৃটিশ সিলিকন ভ্যালির ডাটা অবকাঠামোর ওপর নির্ভরশীল হচ্ছে। ট্রাম্প এবং তার করপোরেশনগুলো বৃটেনের সম্পদ ও তথ্য নিয়ন্ত্রণ করছে, যা এক ধরনের ‘ভ্যাসাল স্টেট’ তৈরি করছে।
কবিতার লাইন অনুযায়ী সাপ বলে-
‘চুপ কর, মূর্খ নারী,
তুমি জানতেই চেয়েছিলে আমি সাপ, তারপরও আমাকে গ্রহণ করেছো।’
এটি প্রতিফলিত করে, ট্রাম্পের সঙ্গে বৃটেনের সম্পর্ক বিশেষ নয়, বরং বিপজ্জনক এবং একপক্ষীয়।
সাদিক খান-ট্রাম্প বিরোধ: আরও একটু এগিয়ে দেখা যাক। লন্ডনের মেয়র সাদিক খানের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সাপে-নেউলে সম্পর্ক। তারা একজন আরেকজনকে কটাক্ষ করে তীব্র আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছেন। মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেয়ার সময় ট্রাম্প বলেন, লন্ডনে ‘একজন ভয়ঙ্কর মেয়র’ আছেন। তার কারণে শহরটি ‘ভীষণভাবে পরিবর্তিত’ হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘এখন তারা শরিয়াহ আইনে যেতে চায়।’ স্যার সাদিক খানও কম যাননি। তিনিও ট্রাম্পের তুলাধুনা সমালোচনা করেছেন। বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বক্তব্যের মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন যে, তিনি একজন ‘বর্ণবাদী, নারীবিদ্বেষী এবং ইসলামবিদ্বেষী।’ বিবিসি’কে স্যার সাদিক বলেন, মানুষ ভাবছে, এমন কী আছে এই মুসলিম মেয়রের মধ্যে যিনি একটি উদার, বহু সাংস্কৃতিক, প্রগতিশীল এবং সফল শহরের নেতৃত্ব দেন। যে কারণে আমি ডনাল্ড ট্রাম্পের মাথার ভেতর ভাড়া ছাড়া থাকছি! তিনি বলেন, আমার মনে হয় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দেখিয়েছেন তিনি বর্ণবাদী, তিনি নারীবিদ্বেষী, তিনি নারীকে ঘৃণা করেন এবং তিনি ইসলামবিদ্বেষী। মানুষ যখন কিছু বলে বা আচরণ করে, তখন সেটাকেই বিশ্বাস করতে হয়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ‘ভয়ঙ্কর মেয়র’ মন্তব্যের জবাবে সাদিক বলেন, তিনি কৃতজ্ঞ যে রেকর্ড সংখ্যক আমেরিকান লন্ডন ভ্রমণে আসছেন। ওদিকে ট্রাম্পের ওই মন্তব্যকে ‘নির্লজ্জ মিথ্যাচার’ বলে অভিহিত করেছেন বৃটিশ এমপি রুপা হক।
জাতিসংঘ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য ট্রাম্পের: সারা বিশ্বের চোখের সামনে নৃশংসভাবে গাজায় গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। শুধু তা-ই নয়। সেখানকার বসতি গুঁড়িয়ে দিচ্ছে। মানুষজনকে ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়েছে। পশ্চিমতীরও দখল করে নিচ্ছে ইসরাইল। এমন পাশবিকতার পরও বৃটেন, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, স্পেন সহ বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলো যখন ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছেন এবং দিচ্ছেন, তখন ট্রাম্প তাদেরকে নিয়ে উপহাস করছেন। তিনি এসব দেশকে বলছেন, তারা নরকে ধাবিত হচ্ছে। অর্থাৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে সমর্থন দিয়ে তাদেরকে মানবিক আবেদনে সাড়া দিলে সেটা নরকে যাওয়া। কিন্তু ডনাল্ড ট্রাম্প যে ইসরাইলকে মাসের পর মাস অস্ত্র ও রসদ সরবরাহ দিয়ে যুদ্ধ অব্যাহত রাখতে সহায়তা করছেন, সে কথা তিনি বলেন না। এর মধ্যদিয়ে শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ এই গণহত্যায় তিনি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন। পাল্টা অভিযোগ তুলছেন জাতিসংঘের বিরুদ্ধে। বলছেন, তারা ব্যর্থ হয়েছে। জাতিসংঘ যুদ্ধ থামাতে পারেনি। হামাস বা হামাসকে সমর্থন দেয় যারা তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে পারেনি। কিন্তু জাতিসংঘ বার বার বলে আসছে গাজায় গণহত্যা চলছে। শিশু, বৃদ্ধ, আবালবনিতা সব অনাহারে মরছে। তাদের চিকিৎসা নেই। আশ্রয় নেই। মহামারিতে মারা যাচ্ছে তারা। শিশুরা অপুষ্টিতে ভুগছে। বার বার জাতিসংঘ যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদে এ বিষয়ে প্রস্তাব উঠেছে। কিন্তু জাতিসংঘকে তো পঙ্গু করে রেখেছেন ট্রাম্প। ইসরাইলের বিরুদ্ধে কোনো প্রস্তাব এলেই যুক্তরাষ্ট্র তাতে ভেটো দিয়েছে। অর্থাৎ তারা নগ্নভাবে ইসরাইলের পক্ষাবলম্বন করেছে। এই গণহত্যাকে সমর্থন দিয়েছে। উপরন্তু পাঠক আপনার স্মরণ থাকার কথা- ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে যেদিন ক্ষমতায় এলেন ট্রাম্প, তার পরপরই তিনি বলেছেন- গাজাকে দখল করে নেবেন। সেখানে ভূমধ্যসাগরের রিভেরা রিসোর্ট বানাবেন। হামাস তার নিজ দেশের স্বার্থের জন্য লড়াই করছে। মাতৃভূমির জন্য লড়াই করলে তারা ‘সন্ত্রাসী’ হয়ে যায়? তাদের রাষ্ট্রের দাবি মেনে নিলে, তারপর যদি তারা সহিংসতা করে- তাহলে তাকে সন্ত্রাস বলা যায়। কিন্তু মাতৃভূমির অধিকারের পক্ষে লড়াই করলে কীভাবে সে বা তারা সন্ত্রাসী হয়? তর্কের খাতিরে যদি মেনেও নেয়া হয়, হামাস উগ্রপন্থি। তাহলে প্রশ্ন আসে, গাজার সব মানুষ কি হামাস? আজ জন্ম নিয়েছে যে শিশু সেও কি হামাস? অন্তঃসত্ত্বা নারীও কি হামাস ‘সন্ত্রাসী’? একটি গোষ্ঠীকে সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে একটি পুরো দেশ দখল করে নেয়া হচ্ছে এই একবিংশ শতাব্দীতে। সারা বিশ্ব তা দেখছে। এসব কাহিনী ইতিহাসে লেখা হয়ে থাকবে।
বিজ্ঞানী নন, অথচ বৈজ্ঞানিক মন্তব্য: ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও বৃটিশ স্বাস্থ্য সংস্থাগুলো নিশ্চিত করেছে যে, গর্ভাবস্থায় প্যারাসিটামল ব্যবহার নিরাপদ। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের একটি দাবির বিপরীতে এমন অভয়বাণী এসেছে। ট্রাম্প প্যারাসিটামল বা ‘টাইলিনল’ ব্যবহারকে অটিজমের সঙ্গে যুক্ত করে সম্প্রতি মন্তব্য করেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, এসব ওষুধের সঙ্গে অটিজমের কোনো ধরনের কোনো সংযোগ প্রমাণিত হয়নি। এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। গত সোমবার ট্রাম্প দাবি করেন, শিশুদের ভ্যাকসিন ব্যবহার এবং গর্ভাবস্থায় মহিলাদের প্যারাসিটামল গ্রহণ অটিজমের সঙ্গে সম্পর্কিত। ২০২০ সালে যেমন তিনি নির্বাচনের পর কোনো রকম প্রমাণ না দিয়ে ভোট চুরির অভিযোগ তুলেছিলেন, তেমনি কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ ছাড়াই এ মন্তব্য করেন। ইউরোপীয় মেডিসিন এজেন্সি (ইএমএ) মঙ্গলবার বলেছে, এ অঞ্চলের বর্তমান পরামর্শে কোনো পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই। তারা জানিয়েছে, ‘উপলব্ধ প্রমাণ দেখায় যে, গর্ভাবস্থায় প্যারাসিটামল ব্যবহারের সঙ্গে অটিজমের কোনো সম্পর্ক নেই। প্রয়োজন হলে, সর্বনিম্ন কার্যকর ডোজ ও ফ্রিকোয়েন্সিতে ব্যবহার করা যেতে পারে।’ সোমবার বৃটিশ স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রকও বলেছে এটি নিরাপদ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মুখপাত্র তারিক জাসারেভিক জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, উপলব্ধ প্রমাণগুলোতে এখনো অসংগতি দেখাচ্ছে। এটি নিশ্চিত করে বলা যায় না যে, প্যারাসিটামল ব্যবহারের ফলে অটিজম হয়। তিনি কিছু গবেষণার উদাহরণ উল্লেখ করেন, যা সম্ভাব্য সংযোগ দেখিয়েছে, কিন্তু পরবর্তী গবেষণায় তা নিশ্চিত হয়নি। সর্ববৃহৎ বৈজ্ঞানিক গবেষণার প্রধান লেখক ভিক্টর আখ্লকভিস্ট বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন সম্ভবত উপলব্ধ প্রমাণগুলো ভুল বোঝাচ্ছে। আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, গর্ভাবস্থায় প্যারাসিটামল ব্যবহার অটিজম সৃষ্টি করে না। এই গবেষণায় সুইডেনে ২৫ লাখ গর্ভধারণের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়।
আমেরিকার সঙ্গে সংস্কৃতিগত যুদ্ধে ইউরোপ: ইউরোপিয়ান কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্স ২৩শে সেপ্টেম্বরে পলিসি ব্রিফিংয়ে বলেছে, ট্রাম্পের আমেরিকার সঙ্গে সংস্কৃতিগত যুদ্ধের মধ্যে রয়েছে ইউরোপ। এর একটি অংশ হলো ট্রাম্পপন্থিরা তাদের নৈতিক ও রাজনৈতিক সহযোগীদের ইউরোপীয় রাজনীতিতে সমর্থন দেয়ার চেষ্টা করা। আরও গভীর স্তরে তারা ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ককে নিচে নামিয়ে আনার চেষ্টা করে। এই দু’টি স্তর একত্র হয়ে একটি সমন্বিত কাহিনী বলে। ট্রাম্প এবং তার অনুসারীরা এটি করতে পারে শুধু ইউরোপীয় নেতারা তাদের সুযোগ দেয়ার কারণে। প্রথম স্তরে, ট্রাম্পপন্থিরা সমাজের ধ্রুব বিভাজন এবং ইউরোপের ‘নতুন ডানপন্থার’ উত্থানকে কাজে লাগায়। দ্বিতীয় স্তরে, তারা ইউরোপীয় নেতাদের দ্বন্দ্ব ও দ্বিধাকে কাজে লাগায়। কিন্তু অবশ্যই এটা বাধ্যতামূলক নয়। এক দশকব্যাপী সংকটের পর ইউরোপীয় জনমত শক্তিশালী হয়েছে। প্রায় সব সদস্য রাষ্ট্রেই এখনো মূলধারার, প্রো-ইউরোপীয় সরকার রয়েছে। ইউরোপীয় রাজনীতিকদের সাহস দেয়া উচিত যে, তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন এবং এমন একটি ইউরোপকে রক্ষা করতে পারেন- যা নিজস্ব নকশা তৈরি করতে পারে। এটি শক্তিশালী ট্রান্স-আটলান্টিক জোটকে সংরক্ষণ করতেও সাহায্য করবে; যেখানে ইইউ এবং ইউরোপীয় দেশগুলো আমেরিকার সমকক্ষ হবে, অধীনস্থ নয়। ইউরোপ এখন এক ধরনের ‘ট্রুম্যান শো’-তে আটকে আছে, আর ট্রাম্পের আমেরিকা হলো পরিচালক। ১৯৯৮ সালের অ্যানড্রু নিকল এবং পিটার উইরের ছবিতে, ট্রুম্যান চরিত্রটি তার জীবনযাত্রা জানে না যে, তা রিয়্যালিটি শো হিসেবে সম্প্রচারিত হচ্ছে। পুরো ঘটনাকে নিয়ন্ত্রণ করছে শো-এর ক্ষমতাশালী প্রযোজক ক্রিস্টফ, যিনি ট্রুম্যানের বিশ্ব এবং মনের উপর প্রভাব ফেলে। যখন ট্রুম্যান সত্য জানতে পারে, তখন সে দ্বিধায় পড়ে: সে কি তার জানা একমাত্র বাস্তবতা ছাড়বে? আর যদি ছাড়ে, তাহলে কীভাবে বের হবে? ট্রুম্যানের মতো, ইউরোপের নেতারা এখন এমন নাটকীয় পরিস্থিতির মুখোমুখি যা তাদের সৃষ্ট নয়। একদিন তাদের কাজ হবে আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধ এড়ানো; পরের দিন, রাশিয়ার সামরিক হুমকির মধ্যে ইউরোপীয় নিরাপত্তার প্রতি মার্কিন প্রতিশ্রুতি নিশ্চিত করা। এই পরিস্থিতি জড়িত রাজনৈতিক বিভাজন পরিচালনার সঙ্গে, যা আংশিকভাবে ট্রাম্প এবং তার মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন আন্দোলনে উস্কানি দেয়।