গাজা এখন এক জীবন্ত কবরস্থান। চারপাশে তাজামৃত্যু সাক্ষ্য দিচ্ছে এখানে জনপদ ছিল। মানুষের বসবাস ছিল। হাসি ছিল। ছিল কান্নাও। শিশুরা উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে খেলাধুলা করতো। স্কুলে যেতো। স্বপ্ন দেখতো আকাশ ছোঁয়ার। কিন্তু এখন চারপাশ নীরব, নিস্তব্ধ। আছে মৃতদের বোবাকান্না। চারদিকে নিহত হাজার হাজার মানুষের আর্তনাদ যেন বাতাসে ভাসছে। ধ্বংসস্তূপের ভেতর দিয়ে হাঁটলে গা শিউরে উঠবে। যারা বেঁচে আছেন, তাদের মনে ক্ষত। চোখের সামনে দেখেছেন প্রিয়জন ছটফট করতে করতে মরে গেছেন। দুই বছর দুইদিন ধরে বিশ্ব শুধু তাদেরকে দেখেছে। মুখে অনেক কথার ফুলঝুরি ছুটিয়েছে। কখনো মনে হয়েছে, এই যুদ্ধকে ব্যবহার করে খেলছে কোনো কোনো মহল। অবশেষে হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। এর নেপথ্য কারিগর হিসেবে দেখা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে। বৃহস্পতিবার তিনিই ঘোষণা দিয়েছেন শান্তিচুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে উভয় পক্ষ। এর কিছুক্ষণ পরে হোয়াইট হাউসের এক্স অ্যাকাউন্টে তার একটি ছবি ব্যবহার করে নিচে লেখা হয়েছে ‘দ্য পিস প্রেসিডেন্ট’। অর্থাৎ শান্তির প্রেসিডেন্ট। দীর্ঘ সময় ধরেই তিনি শান্তিতে নোবেল প্রত্যাশা করছিলেন। সম্প্রতি ট্রাম্প নিজেই এ নিয়ে মুখ খুলেছেন। তিনি বলেছেন, আমি সাতটি যুদ্ধ থামিয়েছি। তার মধ্যে অনেক বড় একটি যুদ্ধ ছিল। কি কি যুদ্ধ থামিয়েছেন এ বিষয়ে হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তা মিডিয়াকে তথ্য দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন ইরান ও ইসরাইলের মধ্যকার যুদ্ধ, রুয়ান্ডা ও কঙ্গোর মধ্যকার যুদ্ধ, আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যকার যুদ্ধ, থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যকার যুদ্ধ, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার যুদ্ধ, মিশর ও ইথিওপিয়ার মধ্যকার যুদ্ধ এবং সার্বিয়া ও কসোভোর মধ্যকার যুদ্ধ থামিয়েছেন ট্রাম্প। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ দু’টি যুদ্ধ ভারত ও পাকিস্তান, ইসরাইল ও ইরানের মধ্যকার। এই দু’টি যুদ্ধ থামিয়েছেন তিনি। দু’টি যুদ্ধই পারমাণবিক ঝুঁকি তৈরি করেছিল। এসব যুদ্ধ থামানোর মাধ্যমে ট্রাম্প শান্তিতে নোবেল প্রত্যাশা করছেন। কিন্তু গত দুই বছর দুইদিন ধরে গাজা উপত্যকায় যা ঘটছে, তা শুধু একটি মানবিক বিপর্যয় নয়। এটি এক রাজনৈতিক অপরাধ। এর আছে গভীর ঐতিহাসিক ও ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব। মানবাধিকার, শান্তি ও নিরাপত্তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের যত বক্তৃতা ও প্রতিশ্রুতি ছিল, গাজার হত্যাযজ্ঞ তা নগ্নভাবে উন্মোচন করেছে। এসব কথার কোনো মূল্যই প্রমাণিত হয়নি। তারা ইসরাইলের চলমান হত্যাকাণ্ড থামাতে পারেনি। কিংবা গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক উচ্ছেদের নীতি বন্ধ করতে পারেনি। যুদ্ধ সাময়িক থামলেও গাজা বিশ্বের সবচেয়ে বড় খোলা আকাশের কবরস্থানগুলোর একটি। কিন্তু এই গণহত্যা বিশ্ব জুড়ে স্বাধীনচেতা মানুষের বিবেককে জাগিয়ে তুলেছে। এটি মানবতা, ন্যায়বিচার এবং সব জাতির আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের পক্ষে এক বৈশ্বিক প্রতিরোধ সৃষ্টি করেছে। বিশ্ব জুড়ে লাখো মানুষ গাজায় পুরুষ, নারী ও শিশুহত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে গর্জে ওঠে। গাজার নাগরিক অবকাঠামোতে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে। পাশাপাশি অনেক দেশ, যেমন বৃটেন, ফ্রান্স ও কানাডা সম্প্রতি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে। শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের জন্য প্রকৃত রাজনৈতিক পথ তৈরির আহ্বান জানিয়েছে। এমনকি যেসব দেশ বহুদিন ধরে ইসরাইলকে সমর্থন করে এসেছে, তাদের কাছেও গাজার এই গণহত্যা এখন আর উপেক্ষা করা সম্ভব নয়।
গত দুই বছরে যা ঘটেছে, তা আধুনিক যুগের অন্যতম জঘন্য মানবতাবিরোধী অপরাধ। বেসামরিক মানুষকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। মানবিক সহায়তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পুরো এলাকার বসতি মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে। খাবারকেও অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। সাহায্য বিতরণ কেন্দ্রে ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের হাজার হাজার মানুষকে ইসরাইলি বাহিনী হত্যা করেছে। জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অসংখ্য প্রতিবেদনে প্রমাণিত হয়েছে, ইসরাইল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনকে স্পষ্টভাবে অমান্য করেছে। গাজার এই আগ্রাসন শুধু মানবিক বিপর্যয় নয়। এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতির ইতিহাসে এক মোড় ঘোরানো মুহূর্ত। এটি বহু দেশকে তাদের অবস্থান পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য করেছে এবং আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার ভেতরকার দ্বৈত মানদণ্ডকে উন্মোচন করেছে। এখন জরুরি প্রশ্ন হলো- কীভাবে এর শিকারদের স্মৃতি সংরক্ষণ করা যাবে এবং কীভাবে ইসরাইলের ভয়াবহ অপরাধগুলো দলিল আকারে সংরক্ষণ করে পুনরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব?
এই গণহত্যা কয়েকটি সত্য উন্মোচন করেছে। তার মধ্যে আছে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর তথাকথিত ‘বিশ্বের সবচেয়ে নৈতিক সেনাবাহিনী’ হওয়ার দাবি মিথ্যা প্রকাশ পেয়েছে। নিহত ৬৭ হাজারেরও বেশি মানুষের প্রায় অর্ধেকই নারী ও শিশু। হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, আশ্রয়কেন্দ্র ও স্কুলগুলোকে ইচ্ছাকৃতভাবে টার্গেট করা হয়েছে। ঘরবাড়ির ভেতর থাকা মানুষদের ওপর বোমাবর্ষণ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘ অবরোধের ফলে গাজায় মহামারি, অনাহার ও দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়েছে। এইসব নৃশংসতা, মানব অস্তিত্বের পরিকল্পিত ধ্বংস, বিশ্বমানবতার যৌথ চেতনায় চিরস্থায়ীভাবে খোদাই হয়ে থাকা উচিত। এই গণহত্যা প্রমাণ করেছে, অনেক দেশ মানবাধিকার রক্ষার দাবি করলেও একই সঙ্গে ইসরাইলকে রাজনৈতিক ও সামরিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। ফলে বিশ্বের জনগণ বিদ্যমান বৈশ্বিক ব্যবস্থার প্রতি আস্থা হারাচ্ছে। পশ্চিমা দেশগুলোর নাগরিকরাই নিজেদের উদ্যোগে প্রতিবাদ করেছে। সরকারকে নীতিগত পরিবর্তনে বাধ্য করেছে। এর ফলেই সম্প্রতি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির ঢল দেখা গেছে। একইসঙ্গে ইউরোপের কিছু রাজধানীতে মার্কিন প্রভাব থেকে ধীরে ধীরে স্বাধীন রাজনৈতিক অবস্থান গড়ে উঠছে। এটি হয়তো মার্কিন আধিপত্যের যুগের সমাপ্তির সূচনা হতে পারে। এই গণহত্যার স্মৃতি যেন মানবজাতির চেতনায় অমোচনীয়ভাবে আঁকা থাকে, এজন্য জরুরি বিশ্বব্যাপী উদ্যোগ।
এর মধ্যে নথি, চলচ্চিত্র ও সাক্ষ্যভিত্তিক ডকুমেন্টারি তৈরি করা উচিত। গাজা ও বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা উচিত। স্কুল-কলেজের পাঠ্যক্রমে ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাতের ইতিহাস অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। জাতিসংঘের উদ্যোগে একটি বিশ্বব্যাপী স্মরণ দিবস নির্ধারণ করা উচিত- গাজার গণহত্যার শিকারদের স্মরণে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মসূচির মাধ্যমে। দুই বছর পার হয়ে যাওয়া কেবল সময়ের হিসাব নয়, এটি নৈতিক দায়িত্বের ডাক। গাজার গণহত্যাকে নথিবদ্ধ করা, স্মরণ করা এবং তার পুনরাবৃত্তি ঠেকানোই মানবতার প্রতি অঙ্গীকার। এর মানে ইসরাইলের অপরাধকে ন্যায্যতা দেয়ার সব প্রচেষ্টা ভেঙে ফেলা, আন্তর্জাতিক আদালতগুলোর প্রতি পূর্ণ সমর্থন দেয়া, যাতে কোনো অপরাধ রাজনৈতিক ছায়ায় আড়াল না হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী ন্যায়বিচার ও শান্তি রক্ষার যে নীতি তৈরি হয়েছিল, তাকে পুনর্জীবিত করাই এখন মানবতার কর্তব্য। গাজার গণহত্যার দুই বছর পর মানবসভ্যতা এক ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে এসে দাঁড়িয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সেপ্টেম্বরের শেষে হামাসের উদ্দেশ্যে ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। তাতে হামাসকে সময় বেঁধে দেন। ইতিবাচক জবাব না দিলে ধ্বংস। এমন হুমকিতে কাজ হয়েছে। অনেকটা শর্তই হামাস মেনে নিয়েছে। বাকিগুলো নিয়ে আলোচনা চলমান। ট্রাম্প যে ২০ দফা প্রস্তাব দিয়েছেন তা নিম্নরূপ-
১. গাজা উগ্রবাদমুক্ত ও সন্ত্রাসমুক্ত এলাকা হবে, যা এর প্রতিবেশীদের জন্য হুমকি তৈরি করবে না।
২. গাজার জনগণের কল্যাণের জন্য গাজা পুনর্গঠিত হবে, যারা যথেষ্ট কষ্ট ভোগ করেছেন।
৩. যদি উভয় পক্ষ এই প্রস্তাবে সম্মত হয়, তবে যুদ্ধ তাৎক্ষণিক শেষ হবে। ইসরাইলি বাহিনী বন্দি মুক্তির প্রস্তুতির জন্য নির্ধারিত সীমান্তে প্রত্যাহার করবে। এই সময়ে সব সামরিক কার্যক্রম স্থগিত থাকবে, যার মধ্যে রয়েছে বায়ু ও আর্টিলারি হামলা।
৪. এই চুক্তি গ্রহণের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ইসরাইলের সব বন্দি, জীবিত ও মৃতদেহ ফেরত পাঠাতে হবে।
৫. সব বন্দি মুক্তি পাওয়ার পর ইসরাইল ২৫০ জন বন্দিসহ এক হাজার ৭০০ গাজাবাসীকে মুক্তি দেবে, যারা ২০২৩ সালের ৭ই অক্টোবরের পরে আটক হন। এর মধ্যে নারী ও শিশু অন্তর্ভুক্ত থাকবে। প্রতিটি ইসরাইলি বন্দির মরদেহ ফেরত দিলে ইসরাইল ১৫ জন মৃত গাজাবাসীর মরদেহ ফিরিয়ে দেবে।
৬. বন্দিদের ফেরত দেয়ার পর হামাসের যারা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান এবং অস্ত্র সমর্পণ করতে রাজি হবে তাদের ক্ষমা করে দেয়া হবে। এ ছাড়া হামাসের যেসব সদস্য গাজা ছাড়তে চান তাদের নিরাপদভাবে গন্তব্য দেশে যেতে দেয়া হবে।
৭. এই চুক্তি গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে গাজায় পূর্ণ সাহায্য অবিলম্বে পাঠানো হবে। যার মধ্যে রয়েছে অবকাঠামোর পুনর্বাসন, হাসপাতাল ও বেকারি পুনর্গঠন, ধ্বংসাবশেষ অপসারণ এবং রাস্তা খোলার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম প্রবেশের ব্যবস্থা।
৮. গাজায় মানবিক সহায়তা জাতিসংঘ, রেড ক্রিসেন্ট ও অন্য আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে পরিচালিত হবে, যেগুলো উভয় পক্ষের সঙ্গে কোনোভাবে সম্পর্কিত নয়। রাফাহ ক্রসিং খোলা থাকবে, যে বিষয়ে চলতি বছরের ১৯শে জানুয়ারি চুক্তি হয়েছিল।
৯. গাজা একটি প্রযুক্তিনির্ভর, অরাজনৈতিক ফিলিস্তিনি কমিটির অস্থায়ী শাসনের অধীনে পরিচালিত হবে। গাজার জনগণের দৈনন্দিন জনসেবা ও পৌরসভার কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে তারা। এই কমিটিতে যোগ্য ফিলিস্তিনি এবং আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা থাকবেন। এর তদারকি ও নজরদারি করবে একটি নতুন আন্তর্জাতিক অস্থায়ী প্রতিষ্ঠান ‘পিস বোর্ড’, যার নেতৃত্ব ও সভাপতিত্ব করবেন ডনাল্ড ট্রাম্প। অন্যান্য সদস্য ও রাষ্ট্রপ্রধানদের নাম পরে ঘোষণা করা হবে, এর মধ্যে থাকবেন বৃটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার।
১০. গাজা পুনর্গঠনে একটি অর্থনৈতিক উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরি করা হবে। এতে এমন বিশেষজ্ঞদের একটি প্যানেল গঠন করা হবে যারা মধ্যপ্রাচ্যের কিছু উন্নত ও সমৃদ্ধ শহরের সূচনা করেছিলেন।
১১. গাজায় একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করা হবে। এ বিষয়ে আগ্রহী দেশগুলোর সঙ্গে শুল্ক ও প্রবেশাধিকার হার নিয়ে আলোচনা ও চুক্তি করা হবে।
১২. গাজা থেকে কাউকে জোরপূর্বক বের করে দেয়া হবে না। তবে যারা যেতে চান তারা নিজের ইচ্ছায় যেতে পারবেন এবং ফিরে আসতেও পারবেন।
১৩. হামাস এবং অন্যান্য গোষ্ঠী গাজার শাসনে সরাসরি, পরোক্ষভাবে বা কোনোভাবে অংশ নেবে না বলে সম্মত হয়েছে। সব সামরিক, সন্ত্রাস ও আক্রমণাত্মক অবকাঠামো ধ্বংস করা হবে, যার মধ্যে সুড়ঙ্গ এবং অস্ত্র উৎপাদন সুবিধা অন্তর্ভুক্ত। নতুন গাজা সমৃদ্ধ অর্থনীতি গড়ে তোলায় এবং তাদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে পূর্ণভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে।
১৪. আঞ্চলিক অংশীদাররা এ বিষয় নিশ্চিত করবে যে, হামাস এবং অন্যান্য গোষ্ঠী প্রতিবেশী দেশ বা তার জনগণের জন্য কোনো হুমকি তৈরি করবে না।
১৫. যুক্তরাষ্ট্র আরব ও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করবে একটি অস্থায়ী আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী (আইএসএফ) গড়ে তোলার জন্য, যা অবিলম্বে গাজায় মোতায়েন হবে। আইএসএফ গাজার ফিলিস্তিনি পুলিশ বাহিনীর প্রশিক্ষণ দেবে এবং তাদের সহায়তা করবে। এই বাহিনী গাজায় দীর্ঘমেয়াদি অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তায় কাজ করবে। ইসরাইল ও মিশরের সঙ্গে মিলিতভাবে সীমান্ত এলাকায়ও কাজ করবে এই বাহিনী।
১৬. ইসরাইল গাজা দখল বা অধিগ্রহণ করবে না। আইএসএফ যখন নিয়ন্ত্রণ ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করবে, তখন ইসরাইলি সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করা হবে। ইসরাইলি সেনাবাহিনী তাদের দখল করা গাজা এলাকা ধাপে ধাপে আইএসএফের কাছে হস্তান্তর করবে।
১৭. যদি হামাস এই প্রস্তাব বিলম্বিত বা প্রত্যাখ্যান করে, তাহলে উপরোক্ত পদক্ষেপগুলো সেই এলাকায় বাস্তবায়িত হবে- যা ইসরাইলি সেনাবাহিনী আইএসএফের কাছে হস্তান্তর করেছে।
১৮. ধৈর্য ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ভিত্তিতে একটি আন্তঃধর্মীয় সংলাপ প্রক্রিয়া গড়ে তোলা হবে, যাতে ফিলিস্তিনি ও ইসরাইলিদের মানসিকতার পরিবর্তনের চেষ্টা করা যায়।
১৯. এসব উদ্যোগে ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণ এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদার জন্য একটি বিশ্বাসযোগ্য পথ তৈরি হতে পারে। ফিলিস্তিনের জনগণের আকাঙক্ষা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র যা স্বীকৃতি দেয়।
২০. শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ সহাবস্থানের জন্য রাজনৈতিক ঐকমত্যে পৌঁছাতে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সংলাপের আয়োজন করবে যুক্তরাষ্ট্র।