এ ই স ম য়

রাজনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আসতেই হবে

শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস | মতামত
সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৫
রাজনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আসতেই হবে

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতি এক জটিল বাঁকে এসে পড়েছে। এই জটিল সংকট সৃষ্টির জন্য সাধারণ মানুষ কমবেশি প্রায় সকল রাজনৈতিক দলকে দায়ী করছে। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে এই সংকট সমাধানের জন্য তারা বিএনপি’র অগ্রণী ভূমিকা দেখতে চায়। ছোট ছোট অনেক দলের বড় বড় অযৌক্তিক কথার যুতসই জবাব না দিয়ে নীরব থাকা সুধীমহল সন্তুষ্ট হচ্ছে না। অন্যান্য রাজনৈতিক দলের অহেতুক সৃষ্ট জটিলতার দায়  কমবেশি বিএনপিকেও বহন করতে হচ্ছে। নানা ঘাত-প্রতিঘাতে অভিজ্ঞ রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি মধ্যপন্থার নীতি অনুসরণ করে চলছে। মধ্যপন্থার নীতি অনুসরণ করায় বিএনপি’র পতাকা তলে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, সমতল, পাহাড়ি, গাড়ো, চাকমা, হাজং, মারমা, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসহ ইসলাম ধর্মাবলম্বী সকল পক্ষের ধর্মপ্রাণ মানুষ ব্যাপকভাবে এই দলে সমবেত হয়েছে। বিগত কয়েকটি নির্বাচনী ফলাফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বিএনপি জয়লাভ করে। দেশে এখন নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে। নির্বাচনী  মৌসুম শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নানা রং-বেরং আধ্যাত্মিক বিশ্লেষক, পীর, ফকির, ঠাকুরগণ এমনকি তাবিজ-কবজ পার্টির আর্বিভাব দেখা যাচ্ছে। এমনকি  অনেক বিশেষজ্ঞ গবেষণা অফিস খুলে বসেছে। অনেকে আবার মাঠ জরিপের নামে তথাকথিত পর্যবেক্ষণ নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দপ্তরে নিয়মিত আনাগোনা দেখা যাচ্ছে। আগাম নির্বাচনী জরিপ, নানা পীর ফকির ও জাতক রাশির গণকদের অতি তৎপরতা ১/১১-এর রাজনৈতিক বিপর্যয় সৃষ্টির কুশীলবদের সঙ্গে কোনো যোগসূত্র আছে কিনা তা রাজনীতিবিদগণ অনুসন্ধান করে দেখতে পারেন। দুর্জনের ছলের কোনো অভাব হয় না, দুর্জনেরা তেমনি নানা কৌশলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অন্দরমহলে আনাগোনা শুরু করেছে। সকল রাজনৈতিক দলকে অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়ে কঠোর সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। 
 

জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী রাজনৈতিক দলসহ সকল গণতান্ত্রিক দলের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ ও প্রয়োজনীয়  সমঝোতা থাকা জরুরি। রাজনৈতিক দলে বিভাজনের সুযোগ নিয়ে কুশীলবদের অনুচরেরা নির্বাচনের মাঠে অর্থকড়ি বিতরণ ও মনগড়া মিথ্যা প্রতিশ্রুতির বন্যা বইয়ে দিচ্ছে। ঐ সব মৌসুমি নেতাদের পেট বানানো ও কাল্পনিক কথাবার্তায় সাধারণ মানুষ বিরক্ত ও ক্ষেত্রবিশেষে বিভ্রান্ত হচ্ছে। মাঠ অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায় দলীয় হাইকমান্ডের দৃষ্টি আর্কষণের জন্য প্রাথমিক মনোনয়ন পাওয়ার জন্য মহলবিশেষের নিয়োজিত মৌসুমি ও সুবিধাবাদী প্রার্থীরা ভোটের মাঠে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা ও গ্রুপিং সৃষ্টি করছে। ফলে দলের সম্ভাব্য জনপ্রিয় প্রার্থীরা অনেকাংশে অসম দলীয় গ্রুপিংয়ের মধ্যে জড়িয়ে যাচ্ছে। বিশেষ মহল কর্তৃক সুবিধাপ্রাপ্ত মৌসুমি পাখিরা এলাকার বেকার যুবক ও কিছু  ভবঘুরে মার্কা লোকদের বিভ্রান্ত করতে পারলেও রাজনৈতিক দলের কর্মী ও সমর্থকদের এদিক ওদিক নিতে পারছে না।  গত ১৭ বছরের 

দমনের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থীকে বিজয়ী করার জন্য দলীয় কর্মী সমর্থকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। 
 

মিষ্টি ফল পাকার গন্ধে যেমন দুধপোকা আসে,  রাজনৈতিক দলের জনপ্রিয়তা দেখে তেমন প্রকৃতির সুবিধাবাদীদের দলে ভিড়ে যাওয়ার চেষ্টা একটু বেড়েছে। পাশাপাশি বিজয়ের সম্ভাবনাময় রাজনৈতিক দলের মধ্যে পরিকল্পিত ভাবে মাদক কারবারি, চাঁদাবাজ, হাটবাজারের ইজারাদার, বালুমহাল দখলদাররা দলীয় ছত্রছায়া পেতে ও যেকোনো উপায়ে রাজনৈতিক দলে অনুপ্রবেশ করতে মরিয়া হয়ে উঠছে। আওয়ামী লীগ ও ফ্যাসিবাদের দোসররা অনেকেই ভোল  পাল্টে এনসিপি, বিএনপি, জামায়াত সহ আন্দোলনকারী রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় ভিড়তে মরিয়া। আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির অনেকেই সুবিধামতো আশ্রয় পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশে প্রায় ৭০ লাখ নেশাগ্রস্ত  কর্মহীন ও ভবঘুরে বেকার যুবক যাদের কোনো রাজনৈতিক ও দলীয় আনুগত্য নেই। হতাশাগ্রস্ত এই তরুণ যুব গোষ্ঠী সুযোগ-সুবিধা হাতিয়ে মধু খেয়ে পরিবেশকে কলুষিত করাই তাদের কাজ। কর্মহীন, নেশাগ্রস্ত, ভবঘুরে এই বেকার যুবকরা সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ গ্রুপ নেতাদের ছত্রছায়ায় সন্ত্রাস ও গ্রুপবাজিতে লিপ্ত হয়। হাটবাজার, ফুটপাথ, গার্মেন্ট ঝুট,  বালুমহাল, ভূমি রেজিস্ট্রেশন অফিসের দখল নিতে চাঁদাবাজ নেতার হয়ে গ্রুপ অনুসারীদের নিয়ে দখলে নেয়া। এই বিরাট ভবঘুরে গ্রুপিংবাজদের  দলীয় 

কোনো আনুগত্য নেই। মাঝে মাঝে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে দলীয় অন্তর্কোন্দল ও গ্রুপিং করাই তাদের অন্যতম প্রধান কাজ।
 


দুর্নীতিগ্রস্ত গ্রুপবাজ নেতারা তাদের অনুগত কর্মীদের আয়োজিত সভায় ও মাঠঘাটের বক্তৃতায় কথার ফুলঝুরি ছুটায়। তারা নিজেদের জাহির করে, তারা জিয়া পরিবার, তারেক রহমানের আশীর্বাদপুষ্ট ও বিশ্বস্ত হাতিয়ার। যা ইচ্ছা মনগড়া ভাষণ দিয়ে দলকে অনেকাংশে বিতর্কিত করা। এই সুবিধাবাদীরা দলের নীতি, আদর্শ ও শৃঙ্খলা কোনোটাই মানতে নারাজ।কথার ফুলঝুরি যতই ফোটাক ভোটের বাজারে সাধারণ মানুষের কাছে এদের কোনো দাম নাই।  সাধারণ মানুষ মাদক ব্যবসায়ী, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী ও গ্রুপবাজদের ঘৃণা করে। দলের আদর্শে অনুপ্রাণিত মফস্বলের প্রকৃত দলীয় তৃণমূল নেতাকর্মীদের সাধারণ মানুষ এখনো সমীহ করে। মফস্বল, থানা ও জেলা পর্যায়ে রাজনৈতিক চর্চা বজায় রাখা সম্ভব হলে মফস্বল, থানা ও  জেলা পর্যায় থেকে ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ  রাজনৈতিক নেতৃত্ব গড়ে উঠবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় মফস্বলের রাজনীতি এখন সন্ত্রাস, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজ ও দখলবাজদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। মাদক সন্ত্রাস চাঁদাবাজরা এখন  বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতা বনে গেছে। রাজনৈতিক দলের তৃণমূলে শৃঙ্খলা, গঠনতন্ত্র ও দলীয় আদর্শ চর্চার অভাবে  ওয়ার্ড থানা জেলা ও গ্রামাঞ্চল থেকে নেতৃত্ব তৈরি হচ্ছে না। 
চিন্তাশীল সমাজ বিশ্লেষকদের এই ভয়াবহ বিপদ সম্পর্কে গবেষণা করতে হবে।
এই ভয়াবহ রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তনের জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে।
আশার কথা এই দেশে অতীতে ভয়াবহ রাজনৈতিক মহাদুর্যোগ ও সংকটকালে  সম্ভাবনাময় জাতীয় নেতৃত্ব গড়ে ওঠার ইতিহাস আছে। মওলানা ভাসানী, শেরেবাংলা, খাজা নাজিমুদ্দিন, সোহরাওয়ার্দী,  মুজিব-তাজ উদ্দীন,  শহীদ জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়ার মতো নেতৃত্ব মহা তুফান মোকাবিলা করেই গড়ে উঠে। রাজনৈতিক মহাসংকট ও দুর্যোগজনক পরিস্থিতিতে দেশের সাধারণ মানুষ তাদের নেতৃত্বের আসনে বরণ করেন। পরবর্তীতে তারাও সফলতার সঙ্গে দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতি মোকাবিলা করে যোগ্যতা ও দক্ষতার সঙ্গে নিজ নেতৃত্বের ভিত্তি রচনা করে গেছেন। কেউ কেউ ক্ষমতায় যাওয়ার পর নিজের কর্মে বিতর্কিত হয়েছেন। বর্তমান দেশের চতুর্মুখী রাজনৈতিক সংকটকালে তারেক রহমান চতুর্মুখী সংকটজনক পরিস্থিতি মোকাবিলা করে দলে ও দলের বাইরে গ্রহণযোগ্যভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করছেন। দক্ষতা ও বিচক্ষণতার সঙ্গে জটিল রাজনৈতিক সংকট মোকাবিলা ও সমাধানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।  নির্বাসনে থেকেও তারেক রহমান গোটা বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিতে সফলকাম হচ্ছেন।
রাষ্ট্র ক্ষমতায় অনেকে যাবে- আসবে। কিন্তু দেশের জন্য এখন প্রয়োজন একজন স্টেটসম্যান। দেশের সাধারণ মানুষ আশা করে শহীদ জিয়া, খালেদা জিয়ার মতো তারেক রহমান এই জাতিকে নেতৃত্ব দিক। পিতা শহীদ জিয়া, মাতা বেগম খালেদা জিয়ার মতো গৌরবোজ্জ্বল অতীত তারেক রহমানকে বরণ করবে। বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে তারেক রহমানকে বাংলাদেশের গ্রহণযেগ্য নেতা হিসেবে বরণ করবে। তারেক রহমান শুধু বিএনপি’র নয় বাংলাদেশের আশা ও সম্ভাবনার সারথি। 
 


বাংলাদেশের আনাচে কানাচে এখনো অনেক ভালো মানুষ আছে। শত প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও তারা দেশ ও মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করে। যদিও দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার তৃণমূল পর্যায়ের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কমিটি গঠিত হয়েছে অনেক ক্ষেত্রেই  বিতর্কিত লোকদের দিয়ে। এক সময় রাজনৈতিক কর্মীরা শ্রমিকের মজুরির ন্যায্য দাবিতে সংগ্রাম করতো, কৃষকদের সারের দাবিতে মাঠে কাজ করতো, সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের জন্য সমবায় সমিতি, পাঠাগার ও ক্লাব প্রতিষ্ঠা করতো, মাদক নিরাময় কেন্দ্র গড়ে তুলতো। এক শ্রেণির সুবিধাবাদী টাউট ব্যক্তিরা তাদের স্বার্থ আদায়ের জন্য বেকার যুবক রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বিভিন্ন ভাবে অপব্যবহার করছে। সুবিধাবাদী টাউটদের খপ্পরে পড়ে সম্ভাবনাময় অনেক রাজনৈতিক নেতার জীবন রংমহলের মোহে জড়িয়ে সর্বস্বান্ত করেছে। গ্রুপ রাজনীতি ও প্রশাসনের চামচামি আর সুবিধাবাদীদের আধিপত্যের কারণে আদর্শবাদী রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা পদে পদে লাঞ্ছিত হচ্ছে।
দুষ্ট চক্রের প্রভাবে মফস্বল, থানা, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের অসংখ্য আদর্শবান নেতাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অঙ্কুরে বিনষ্ট হচ্ছে। সুবিধাবাদী ও দুর্নীতিবাজ ও গ্রুপবাজ নেতাদের দাপটে আদর্শবাদী নেতাকর্মীরা কোণঠাসা অবস্থার মধ্যে পড়েছে। গ্রুপবাজ আগাছার দল  রাজনীতিকে কলুষিত করে দলকে পাপ আর দুর্নীতিতে নিমজ্জিত করে রাখতে চায়। মফস্বলের কর্মী-সমর্থক ও তৃণমূল মাঠের প্রকৃত নেতাকর্মীরাই দলের প্রাণশক্তি। 
দলের প্রাণ তৃণমূল নেতাকর্মীদের শ্রম ঘামে দল আজও উজ্জীবিত আছে। কিন্তু  দুঃখের বিষয় সুবিধাবাদী, অসাধু ও দুর্নীতিগ্রস্ত কোঠারি একটি চক্রের হাতে রাজনীতি এখনো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অসাধু চক্রের সঙ্গে জড়িত সকল ব্যক্তিবর্গের হাত থেকে  সাংগঠনিক দায়িত্ব উদ্ধার করতে হবে। সংগঠনে  সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ও দলীয় আদর্শ চর্চার উন্মুক্ত পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে। স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি ও বিশৃঙ্খলার  কারণে নিবেদিতপ্রাণ রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা দারুণ কষ্টে আছে। ধীরে ধীরে গ্রুপবাজ চিহ্নিত নেতৃত্ব সরিয়ে গণমানুষের নেতাদের নেতৃত্ব ফিরে আসবে।
 


সামপ্রতিককালে প্রায় সকল রাজনৈতিক দলের মধ্যে গ্রুপিং নামক এক ভয়াবহ ক্যান্সার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। গ্রুপিংয়ের ছত্রছায়ায় দুর্বৃত্তরা রাজনৈতিক আবরণে মাদক, চাঁদাবাজি, দখল-বেদখলে লিপ্ত হয়েছে। যা দমন করতে না পারলে রাজনীতি ও সংগঠন কল্যাণের চেয়ে অকল্যাণই ডেকে আনবে। দেশের অনেক জেলা ও উপজেলার পাড়া- মহল্লা এমনকি গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষ পর্যন্ত কিছু কিছু জায়গায়  রাজনৈতিক দলের বিষয়ে আতঙ্কিত বোধ করছে। এই ভয়াবহ নষ্ট রাজনীতির প্রবণতা রুখতে না পারলে সাম্য, মানবিক মর্যদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে না। এ কাজ শুধু বিএনপি’র একার কাজ নয়। সামাজিক বিপর্যয় ও নৈরাজ্য সব রাজনৈতিক দলকে একসঙ্গে সব ঐকমত্য সৃষ্টি করে ঐক্যবদ্ধভাবে  দায়িত্ব পালন করতে হবে। এসব সামাজিক বিষয়ে রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে এই ধরনের অন্যায় ও অপকর্মের বিরুদ্ধে বিএনপি নিজের দলের নেতাকর্মীদের বারবার সতর্ক করেছে। বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজে দলের নেতাকর্মীদের বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতির প্রয়োগ করছেন। 
আগামী দিনে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে রাজনৈতিক দলগুলোকেই সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখতে হবে। অন্য দল যাই করুক মানুষ বিএনপি’র দিকে তাকিয়ে আছে। দেশের মানুষ চায় সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি সাধারণ মানুষের আকাঙ্ক্ষার বাইরে কোনো অন্যায়কে যেন প্রশ্রয় না দেয়।
আগামী দিনের রাজনীতিতে প্রত্যেকটি দলকেই মনে রাখতে হবে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা কী ছিল? শহীদের আত্মত্যাগ এবং আহতদের শারীরিক এবং মানসিক যন্ত্রণার মূল্য পরিশোধ করার পথ শুধু একটাই খোলা আছে আর তা হচ্ছে দেশে পরিচ্ছন্ন একটা রাজনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা। একা কোনো দল বা ব্যক্তি কারও পক্ষেই তা সম্ভব নয়। তবে নেতৃত্বের অগ্রগামী দায়িত্বটা বিএনপিকেই নিতে হবে। সকল দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের গণতন্ত্র, আইনের শাসন এবং ন্যায়বিচারের প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকারই পারে বাংলাদেশের রাজনীতির সংস্কৃতি পাল্টে দিতে। অনেক রক্ত আর জীবনের বিনিময়ে বাংলাদেশকে নতুন করে সাজানোর যে সুযোগ আমরা পেয়েছি তাকে কাজে লাগানো প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব। আসুন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার লড়াইয়ে নিঃস্বার্থ ভাবে সবাই এক সঙ্গে নিয়ে কাজ করি। এমন সুযোগ এবং সম্ভাবনা জাতীয় জীবনে আর নাও আসতে পারে। কোনো ভাবেই আমরা যেন এই সুযোগ হাতছাড়া না করি। ্ত
লেখক: আইনজীবী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী

মতামত'র অন্যান্য খবর