একটি ইতিবাচক পরিবর্তন প্রত্যাশায় রাজনীতির খোলনলচে বদল নিয়ে আলোচনা চলছে। জুলাই সনদ, জাতীয় সনদ যে নামেই ডাকি না কেন- সকলের চাওয়া হওয়া দরকার অর্থবহ পরিবর্তন। আর তা হতে হবে রাজনৈতিক দলগুলোর সমঝোতার মাধ্যমেই। সবশেষে রাজনীতিকদের ঐকমত্যই এগিয়ে নিয়ে যাবে দেশের কল্যাণ। কিন্তু হতাশার চিত্র লক্ষ্য করা যাচ্ছে বেশ কিছু বিষয়ের ক্ষেত্রে। দিনের পর দিন বৈঠকের পরও ঐকমত্য কমিশন তাদের সংস্কার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করতে পারেনি। ফের কমিশনের সময় বাড়ানো হয়েছে।
নির্বাচন সমাগত। এই মুহূর্তে সকল পক্ষেরই নির্বাচনী ট্রেনে যাত্রী হতে যেরকম উৎসাহ উদ্দীপনা থাকা দরকার তাতে কোথাও যেন ভাটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পিআর নিয়ে বেশ কিছু দল নয়া বিতর্ক উস্কে দিয়েছে। সিইসি সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতির আওতায় নির্বাচন আয়োজনের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে স্পষ্ট বলেছেন, পিআর পদ্ধতি সংবিধান ও আরপিও (গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২) উভয় জায়গাতেই নেই। ফলে এটি বাস্তবায়নের জন্য আগে আইন
সংশোধন করতে হবে, যা নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারে পড়ে না। এই বিতর্কের নিরসন এবং একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন কীভাবে সম্ভব হবে তা সামনের দিনে দেখার বিষয়।
২
আমরা বরাবরই একটি বিষয় খেয়াল করি, দেশের বাইরে দেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যু নিয়ে কাইজ্যা করতে। যা আসলেই দৃষ্টিকটু। প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে যোগ দিতে যাওয়া টিমের সঙ্গে জেএফকে বিমানবন্দরে যে ধরনের ঘটনা ঘটেছে তা অনাকাঙ্ক্ষিত। ঢাকা সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু ইস্যু নিয়ে সাংবাদিকদের করা প্রশ্ন এড়িয়ে যান। তারমধ্যে অন্যতম ছিল তিস্তা চুক্তির বিষয়। অনেক আলোচনায় থাকলেও তিস্তা নিয়ে সেবারও খুব অগ্রগতি হয়নি। মনমোহন সিং ঢাকায় এ নিয়ে কোনো কথা না বললেও ভারতের সীমানায় প্রবেশ করতেই বিমানে বসেই এক সাংবাদিককে জানালেন, মমতার আপত্তির কারণেই তিস্তা চুক্তি করা সম্ভব হয়নি। তিনি নিজ দেশের বিষয় বাইরে এসে খোলাসা করলেন না। আমাদের রাজনীতিকরা নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বিদেশিদের কাছেই বলেন বেশি। এতে নিজেদের হীনম্মন্যতাই প্রকাশ পায় বেশি। নিজ দেশের প্রধানের দেশের বাইরে সফর এটি সকল মহলেরই ভাবমূর্তির সঙ্গে সম্পর্কিত। প্রতিবাদ থাকতেই পারে তবে তা হতে হবে ভদ্রতা ও সৌজন্যতাবোধ প্রকাশের মাধ্যমেই।