শেখ হাসিনার সরকার উৎখাতের পর থেকে গত দেড় বছরে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বিবৃতি ও পাল্টা বিবৃতি দেয়া চলছিল। এমনকি কূটনীতিকদের এক দেশ অন্য দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রকে তলব করে নানা সময়ে উদ্বেগ জানানোও চলছিল। এরই মাঝে সম্পর্ক মেরামতের চেষ্টাও দেখা গিয়েছে। ভারত পূর্বের অবস্থান থেকে সরে এসে অবস্থান বদলের ইঙ্গিতও দিয়েছে। দৈনিক মানবজমিনে প্রকাশিত মতিউর রহমান চৌধুরীর একটি রিপোর্টের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, দুই দেশের সম্পর্কোন্নয়নকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে নীতি-কৌশল সাজিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। কূটনৈতিক সূত্র উল্লেখ করে প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, নরেন্দ্র মোদি নিজেই এখন বাংলাদেশ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবেন। নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালকে সম্পর্ক এগিয়ে নেয়ার দায়িত্ব দিয়েছেন ইতিমধ্যেই।
এই আবহে বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমানের সঙ্গে দিল্লিতে বৈঠক করেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। বৈঠকে দুই দেশই বিদ্যমান দূরত্ব কমানোর তাগিদ দেয়ার পাশাপাশি সম্পর্ক স্বাভাবিক করার দিকে মনোযোগ দেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করে বিবৃতি এবং চিকিৎসায় সব রকমের সহযোগিতার কথা জানানোর মাধ্যমে স্পষ্ট করে দেন যে, বাংলাদেশের সব পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টায় তারা ব্রতী হয়েছেন। তার কিছুদিন আগেই ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, ভারত বাংলাদেশের সব পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তুলবে। আওয়ামী লীগের উপর দীর্ঘ ১৫ বছরের নির্ভরতা থেকে সরে আসারই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনও বলেছেন, ভারত হাসিনাকে ফেরত দিক বা না দিক তাতে সম্পর্ক আটকে থাকবে না। তবে সমপ্রতি ভারতের সঙ্গে (সম্পর্কে) টানাপড়েন থাকার কথা স্বীকার করে উপদেষ্টা বলেছেন, ‘সম্পর্কের এই টানাপড়েন মেনে নিয়েই বর্তমান সরকার ভারতের সঙ্গে একটা ভালো সম্পর্ক তৈরি করার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশের হাইকমিশনারও দিল্লিতে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আসলে অত্যন্ত গভীর ও বহুমাত্রিক, অতি সমৃদ্ধ একটি অতীতের পটভূমিতে এর পারস্পরিক নির্ভরশীলতাও অনুধাবন করা প্রয়োজন। হাইকমিশনার একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে লেখেন, পারস্পরিক আস্থা, মর্যাদা, প্রগতিশীলতা, সুফল ভাগাভাগি আর অভিন্ন মূল্যবোধের ভিত্তিতেই দু’দেশের মানুষের শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করা সম্ভব।
কয়েকদিন আগে পর্যন্ত দুই দেশের মনোভাবের গুণগত পরিবর্তনের দিকে লক্ষ্য রেখে ভারতের কূটনৈতিক মহলও আশাবাদী হয়েছিলেন, দীর্ঘ সময় ধরে চলা সম্পর্কের স্থবিরতা এবার হয় তো গতি পেতে চলেছে। অবশ্য ভারত রাজনৈতিক চাপও বজায় রেখেছে। বারে বারে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারত শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তার কথাও বলে এসেছে।
প্রকৃতপক্ষে এই টানাপড়েনের মধ্যেই বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনের দিকে লক্ষ্য রেখে ঘুঁটি সাজানো হচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই গত পাঁচ/সাতদিনের মধ্যে সম্পর্কে দ্রুতই উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে। গত রোববার ভারতের হাইকমিশনারকে ডেকে ভারতে পালিয়ে যাওয়া ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অব্যাহত উস্কানিমূলক বক্তব্যে অন্তর্বর্তী সরকারের গভীর উদ্বেগের বিষয়টি জানানো হয়। ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী এবং ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত সন্দেহভাজন ব্যক্তিরা ভারতে প্রবেশ করলে তাদের গ্রেপ্তার করে ফেরত পাঠানোরও আহ্বান জানায় বাংলাদেশ। অবশ্য ভারত সঙ্গে সঙ্গে জানিয়ে দেয় যে, ভারতের মাটি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে দেয়া হবে না। এরপরেই বুধবার বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব করে নিরাপত্তা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি নিয়ে ভারতের গভীর উদ্বেগ জানানো হয়। বাংলাদেশে সামপ্রতিক কয়েকটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে ‘চরমপন্থি মহল’ যে ভুয়া বয়ান তৈরির চেষ্টা করছে, ভারত তা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করে। দুঃখজনকভাবে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এসব ঘটনার বিষয়ে এখনো পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করেনি কিংবা ভারতের সঙ্গে অর্থবহ কোনো তথ্যপ্রমাণও বিনিময় করেনি বলেও ভারতের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়। আসলে কয়েকদিন ধরেই ভারতবিরোধী নানা মন্তব্যে জামায়াতের সিনিয়র নেতারা এবং অ্যাক্টিভিস্ট-রাজনীতিবিদরা যেভাবে রাজনীতির অঙ্গনে উত্তাপ বৃদ্ধির চেষ্টা করে চলেছেন তাতে ভারত নজর রাখছিল। ভারতীয় হাইকমিশন ও ভিসা সেন্টারগুলোর নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ বাড়ছিল আন্দোলনের হুঙ্কারের ফলে। বিজয় দিবসে ঢাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের নাম প্রায় ১৫ বছর আগে বিএসএফের হাতে নিহত বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী খাতুনের স্মরণে ‘ফেলানী এভিনিউ’ রাখার ঘোষণা দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান পরিষ্কার জানিয়ে দেন, আমাদের বোন ফেলানী কাঁটাতারে ঝুলন্ত অবস্থায় জীবন দিয়েছিল। ভারতের এ নৃশংসতা মনে করিয়ে দেয়ার জন্য আমরা এ সড়কের নাম করেছি ফেলানী সড়ক।
তবে ভারতের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতের সংযমের বাঁধ ভেঙে যায় বিজয় দিবসে দেয়া জাতীয় নাগরিক পার্টি বা এনসিপি’র নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ’র দেয়া মন্তব্যের পরই। একটি সভায় হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ভারতকে স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, যারা আমার দেশের সার্বভৌমত্বকে বিশ্বাস করে না, যারা আমার দেশের সম্ভাবনাকে বিশ্বাস করে না, যারা ভোটাধিকারকে-মানবাধিকারকে বিশ্বাস করে না, যারা এ দেশের সন্তানকে বিশ্বাস করে না, আপনারা (ভারত) যেহেতু তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছেন, একটা কথা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, ভারতের যারা সেপারেটিস্ট আছে, বাংলাদেশে আমরা তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে যে সেভেন সিস্টার্স আছে সেটাকে ভারত থেকে আলাদা করে দেবো।
এক আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ বলেন, চিকেন নেক বা শিলিগুড়ি করিডোরের কাছাকাছি থাকা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিষয়টি ভারতের নিরাপত্তার জন্য খুবই সংবেদনশীল বিষয়। আর তাই ভারত এই সব রাজ্যগুলোতে সামরিক ঘাঁটি তৈরি করছে। আর উত্তর-পূর্ব ভারত সম্পর্কে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস যখন চীনে মন্তব্য করেছিলেন তখনই ভারত প্রতিবাদ জানিয়েছিল। অতীতে এই অঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে ভারতবিরোধী তৎপরতা চালিয়েছিল। নতুন করে সেই পরিস্থিতি তৈরির আশঙ্কা করা ভারতের পক্ষে স্বাভাবিক।
যদিও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, অ্যাক্টিভিস্ট-রাজনীতিবিদের বক্তব্য সরকারের অবস্থান নয় এবং কোনো বিচ্ছিন্নতাবাদী বাংলাদেশের ভূমিতে আশ্রয় পাবে না, কিন্তু ভারতের গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীকে ভারতের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা চলছে। ভারতীয় গণমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, আসামের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফা (স্বাধীন) নেতা পরেশ বড়ুয়া মিয়ানমার থেকে সরে এসে বাংলাদেশে অবস্থান নিয়েছেন। এই সব ঘটনায় ভারতের নিরাপত্তা উদ্বেগ বেড়ে চলেছে। ফলে অনেকটা কঠোর মনোভাব প্রকাশ করতে হয়েছে।
তবে নির্বাচন নিয়ে ভারতের বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন, আমরা একটা অত্যন্ত উচ্চমানের, মানুষ যেন গিয়ে ভোট দিতে পারে, সেই পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাই। যে পরিবেশ গত ১৫ বছর ছিল না। এখন ভারত আমাদের এটা নিয়ে উপদেশ দিচ্ছে, এটা আমি সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য মনে করি। এই ‘অগ্রহণযোগ্য’ মনে করার কারণ ব্যাখ্যা করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন, তখন যে নির্বাচনগুলো প্রহসনমূলক হয়েছে, তখন তারা (ভারত) একটি শব্দও উচ্চারণ করেনি। এখন সামনে একটা ভালো নির্বাচনের দিকে আমরা যাচ্ছি, এই মুহূর্তে আমাদেরকে নসিহত করার তো কোনো প্রয়োজন নেই।
একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, এই অঞ্চলের ভূরাজনীতি ও নিরাপত্তার দিকে লক্ষ্য রেখে ভারত চুপ করে বসে থাকতে পারে না। তাই সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক নির্বাচনের কথা বলেছে। নির্বাচনে যারা জয়ী হতে পারেন তাদের মাধ্যমে ভারত সম্পর্ক তৈরির নতুন বয়ান তৈরিতে এগিয়ে যাচ্ছিল। সরকারকে দেয়া পররাষ্ট্র মন্ত্রকের সংসদীয় কমিটিও সুপারিশ করেছে, বাংলাদেশ অরাজক পরিস্থিতিতে যাওয়ার আগেই ভারতের উচিত হবে কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক আলোচনার পথ খুঁজে বের করা। তবে বাংলাদেশের ইসলামী শক্তির বিরুদ্ধে বিএনপি’র অবস্থানে ভারত সদর্থক দিক দেখতে পেয়েছে। সামপ্রতিক ঘটনাবলিতে এটা স্পষ্ট যে, জনপ্রিয়তার নিরিখে এগিয়ে থাকা বিএনপি’র সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টাতে যতি টেনে দেয়ার লক্ষ্যে ইসলামপন্থিরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। আর তাই নিত্যনতুন ন্যারেটিভ বানানোর চেষ্টা চলছে।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির গুলিতে মৃত্যুর পর বাংলাদেশে সামগ্রিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে ভারতবিরোধিতার আবহ তৈরি করা হয়েছে। সেই আবহে ভারতবিরোধী বিক্ষোভ সহ ভারতীয় হাইকমিশন ও ভিসা অফিসগুলো রোষের মুখে পড়েছে। অন্যদিকে সংখ্যালঘু নির্যাতন ও এক হিন্দু যুবককে হত্যার প্রতিবাদে ভারতের নানা প্রান্তে বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু হয়েছে। দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন ও উপ-হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ হয়েছে। নিরাপত্তা উদ্বেগ জানাতে বাংলাদেশ ও ভারত ১০ দিনের মধ্যে দুইবার হাইকমিশনারকে তলব করেছেন। কূটনীতিতে উত্তেজনার ছাপ পড়লেও অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক খুব বেশি খারাপ হয়নি বলে দাবি করেছেন। সম্পর্ক আর খারাপের দিকে যাবে না বলে জানিয়ে তিনি বলেন, সম্পর্ক এখনো খুব খারাপ পর্যায়ে যায়নি। তিনি ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবে বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা দেশটির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করছেন। তিনি নিজেও বিভিন্ন জনের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলছেন।
এই ইতিবাচক বক্তব্য ভারতকে নিশ্চিত ভাবেই আশ্বস্ত করবে। ভারতের সামপ্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে কঠোর কোনো বিবৃতি না দেয়া ইঙ্গিতপূর্ণ বলে মনে করছেন কূটনৈতিক মহল। ভারতের অভ্যন্তরে বিভিন্ন স্তর থেকে কড়া পদক্ষেপের দাবি উঠলেও ভারতের পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারকরা ধীরে চলার নীতি নিয়ে চলছেন।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশের উগ্র রাজনীতির মোকাবিলা করার রাজনৈতিক শক্তির দিকে ভারত নজর রেখেছে। আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে বিএনপিই ভারতের ভরসা। বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান অভ্যন্তরীণ ও পররাষ্ট্রনীতির প্রসঙ্গে যে সব বক্তব্য রেখেছেন তা ভারতের কাছে আশাব্যঞ্জক।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই মুহূর্তে বিএনপিই সর্বত্র আলোচনার কেন্দ্রে। তারেক রহমান ফিরে আসায় জনপ্রিয়তা তুঙ্গে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে।
ভারতীয় পর্যবেক্ষকরা বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনের দিকে লক্ষ্য রেখে ভারত নতুন করে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অবস্থানের কোনো বদল ঘটাবে বলে মনে করছেন না। ্ত